‘নববর্ষ এখন ‘শহুরে কালচার’ হয়ে গেছে’

0

নববর্ষ এখন ‘শহুরে কালচার’ হয়ে গেছে। আগে নববর্ষে মুক্তির কথা থাকলেও এখন মানুষের যন্ত্রণা আর শাসকের টিকে থাকার কথা রয়েছে। বৃহস্পতিবার বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে এমনই কথা বলছেন বিএনপি নেতারা।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বাণীতে বলেন, গণতন্ত্র ও অধিকারহীন পরিবেশের মধ্যে জাতিকে নববর্ষ পালন করতে হচ্ছে। বর্তমান দুঃসময় ও নৈরাজ্যের অভিঘাত সত্ত্বেও শান্তি, স্বস্তি, সুস্থতা ও সহাবস্থান ফিরিয়ে আনতে হবে। বিচ্ছেদ ও বিভাজন দূর করে পহেলা বৈশাখকে পারস্পরিক শুভেচ্ছায় বরণ করে নিতে হবে।

দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, নববর্ষ এখন শহুরে হয়ে গেছে। ছোটবেলায় যখন দেখেছি একেবারে ন্যাচারাল। জাতীয় জীবনের অংশ দেখেছি বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের হালখাতা হতো, রসগোল্লা দিতো, দোকানগুলো হতো সাজানো। গ্রামীণ জীবনের একটা বড় উৎসব এটা দেখেছি। এখন কেমন যেন শহুরে হয়েছে। সেই সময়টাই আমার কাছে মনে হয় স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন সামগ্রিকভাবে দেশের যে পরিস্থিতি- গোটা দেশের মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা নেই, চলাচলের স্বাধীনতা নেই, মত প্রকাশ ও নিজের বিশ্বাস নিয়ে চলার স্বাধীনতা নেই। উৎসব সব মানুষকে একত্রিত করে। একত্রীকরণের যে বোধটা, সেটা ক্রমাগতভাবে কর্তৃত্ববাদী শাসনের কারণে হারাচ্ছে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আগে নববর্ষ মানেই নতুনের বার্তা গ্রহণ করা। কিন্তু এখনকার নববর্ষ হচ্ছে নতুনের চেয়ে পুরাতনকে ধরে রাখা। অর্থাৎ ১২ বছরের যে কর্তৃত্ববাদী শাসন চলছে এটাকে ধরে রাখার জন্য নতুন আঙ্গিকে মানুষকে ভুলিয়ে রাখা। মানুষ নানা যাতনায় আছে সে কথা বলছে না। আগে নববর্ষে মানুষ মুক্তির বার্তার কথা বলেছে। স্বতন্ত্রতার কথা বলেছে, গণতন্ত্রের কথা বলেছে। এখন শুধু পান্তা-ভাতের মধ্য দিয়ে বর্তমান শাসনকে রক্ষার কথা বলা হচ্ছে।

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল বলেন, ইতিহাস-ঐতিহ্য সংস্কৃতির বড় অংশজুড়ে রয়েছে এই নববর্ষ। প্রতি বছরই আমরা নববর্ষ উদযাপন করি। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে যেহেতু মানুষের কথা বলার অধিকার নেই, সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে এদেশের জনগণ। এছাড়া দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, গণতন্ত্রহীন সমাজ মানুষের মনে ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে। যে কারণে মানুষের মনের মধ্যে শুধু নববর্ষ কেন সব ধরনের আনন্দ হারিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, এখন কোনো উৎসবে এদেশের জনগণের কাছে আর উৎসব মনে হয় না। সুতরাং যতক্ষণ পর্যন্ত না দেশে গণতন্ত্রের শাসন ফিরে আসবে, মানুষের মৌলিক অধিকার ফিরে আসবে, মানুষ অর্থনৈতিক হীনতা কাটিয়ে উঠবে, ততদিন উৎসবগুলোতে আনন্দ ফিরে আসবে না।

খালেদা জিয়ার অবস্থার কথা তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এখনো কারারুদ্ধ। তার শারীরিক অবস্থা বেশি ভালো নয়। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তার মাতৃভূমি থেকে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছেন। আমাদের নেতাকর্মীদের নামে মামলা, এ অবস্থায় আমাদের মাঝে নববর্ষের আনন্দ নেই। যেহেতু আমরা ১৬ কোটি মানুষের অংশ, সুতরাং ১৬ কোটি মানুষের যে অবস্থা আমাদেরও একই অবস্থা।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com