স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে এনজিওগুলোর ভূমিকা উদ্বেগজনক: টিআইবি

0

স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে এনজিওগুলো সরকারি দপ্তরগুলোর থেকে পিছিয়ে রয়েছে। সরকারি দপ্তরগুলোর মধ্যে তথ্য প্রকাশে এগিয়ে আছে খাদ্যমন্ত্রণালয়, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এনজিওগুলোর মধ্যে এগিয়ে আছে কোস্টাল অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশাল ট্রান্সফরমেশন।

‘তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশ চর্চার মূল্যায়ন’ শীর্ষক টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। গবেষণা দলের প্রধান শাহজাদা এম আকরাম গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপনা করেন। এতে বলা হয়, নমুনায় অন্তর্ভুক্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রায় ৩৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠান সন্তোষজনক (৬৭% এর ওপর) স্কোর পেয়েছে; প্রায় ৮.৫ শতাংশ সরকারি প্রতিষ্ঠানের স্কোর উদ্বেগজনক। পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী প্রথম দশটি র‌্যাংক/অবস্থানে রয়েছে ৬৯টি প্রতিষ্ঠান, যাদের প্রাপ্ত স্কোর ৩৩ থেকে ৪২ এর মধ্যে। প্রথম স্থানে সার্বিকভাবে ৪২ স্কোর (৮৪ শতাংশ) পেয়ে যুগ্মভাবে রয়েছে খাদ্যমন্ত্রণালয়, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। দ্বিতীয় স্থানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে যুগ্মভাবে কৃষি মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সেতু বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় – মাদ্রাসা বোর্ড, শিল্প মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়।

সার্বিকভাবে, সরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সর্বনিম্ন ৪ স্কোর (৮ শতাংশ) পেয়েছে আন্তঃবাহিনী নির্বাচন পর্ষদ। কোনো এনজিও-ই প্রথম দশ অবস্থানে নেই। যুগ্মভাবে বেশ কয়েকটি করে প্রতিষ্ঠান একই স্কোর পেয়ে একই র‌্যাংকে অবস্থান করছে। অন্যদিকে কোনো এনজিও-ই সন্তোষজনক স্কোর পায় নি; ৯৪.৯ শতাংশ এনজিও’র স্কোর উদ্বেগজনক।

এতে আরো বলা হয়, এনজিওদের মধ্যে প্রথম দশটি অবস্থানে রয়েছে ১৯টি প্রতিষ্ঠান, যাদের প্রাপ্ত স্কোর ৭ থেকে ২২ এর মধ্যে। সর্বোচ্চ স্কোর ২২ (৪৪ শতাংশ) পেয়ে প্রথম স্থানে আছে একটি জাতীয় পর্যায়ের এনজিও কোস্টাল অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশাল ট্রান্সফরমেশন, দ্বিতীয় অবস্থানে ঢাকা আহসানিয়া মিশন ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে গণ উন্নয়ন কেন্দ্র। প্রথম ১০টি অবস্থানের মধ্যে ৬টি আন্তর্জাতিক এনজিও, এবং তালিকার বাকি সকল ওয়েবসাইট জাতীয় পর্যায়ের এনজিও’র। উদ্বেগজনক গ্রেডিংপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে গড় স্কোর ৮ (শতকরা হার ১৫), অপর্যাপ্ত গ্রেডিংপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে গড় স্কোর ২৭ (শতকরা হার ৫৪), এবং সন্তোষজনক গ্রেডিংপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে গড় স্কোর ৩৭ (শতকরা হার ৭৫)।

সার্বিকভাবে দেখা যায়, অধিকাংশ সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট এনজিও’র থেকে তুলনামূলক ভাল স্কোর পেয়েছে। অধিকাংশ সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের ডিজাইন এবং প্রকাশিত তথ্যের ধরন খুব কাছাকাছি। কিন্তু এনজিও’র ক্ষেত্রে এরকম একক কোনো ডিজাইন/ ফরমেট দেখা যায় না। এছাড়া এখনও এনজিও’র ক্ষেত্রে আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট তথ্যসমূহ প্রকাশের চর্চা ও দৃষ্টান্তের ঘাটতি লক্ষণীয়।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তুলনামূলক ভাল করলেও গভীরে তাকালে দেখা যাবে তাদের আরো ভাল করা উচিত ছিল। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো একটা স্ট্যান্ডার্ড দাঁড় করাতে পেরেছে। এনজিওগুলোর ভূমিকা আমাদের জন্য হতাশাজনক। আমাদের সকলকে জোরালোভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com