রাষ্ট্র ও জনগণের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন জিয়াউর রহমান: আমীর খসরু

0

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে স্বাধীন রাষ্ট্রহিসেবে বাংলাদেশের পথচলা যখন বারংবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল ঠিক তখন রাষ্ট্র জনগণের জন্য ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হনরাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। রাষ্ট্র পরিচালনায় তার দক্ষতা দূরদর্শিতার কারণে অতি অল্প সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির তকমা ফেলে স্বনির্ভর বাংলাদেশের পথে, পথ চলতে শুরু করে। শহীদ জিয়া আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে বিভিন্ন উন্নয়নমুখী কর্মকান্ড শুরু করেন। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ আজ মাথা উঁচু করে দাড়াতে শিখেছে।

তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে নীরব ছিলেন না।এদেশের সেনাবাহিনীকে সংগঠিত করে তিনি পাক সেনাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করেছেন চট্টগ্রাম থেকেই। তিনি স্বাধীনতার পরের সরকারের একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে দেশকে বের করে নিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। স্বাধীনতার ঘোষণাএবং মুক্তিযুদ্ধের প্রথম বিদ্রোহ চট্টগ্রাম থেকেই হয়েছে। তাই চট্টগ্রামের ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধপূর্ব এবং যুদ্ধকালীন সময়ে অবিস্মরনীয়।দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শহীদ জিয়ার অবদান এদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে।

মঙ্গলবার, জুন , ২০২১, বিকালে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম উত্তর দক্ষিণ জেলা বিএনপি আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসবকথা বলেন।

আমীর খসরু আরও বলেন, জিয়াউর রহমানকে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সংগ্রামী নেতাজী সুভাস বসুর সঙ্গে তুলনা করেন, ইতিহাসে দুজন বাঙালি অস্ত্র হাতে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। একজন হচ্ছেন নেতাজী সুভাস বসু। তিনি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধঘোষণা করেছিলেন। আরেকজন হচ্ছেন জিয়াউর রহমান। আর কোনো বাঙালি যুদ্ধের ঘোষণা দেয়নি। সমস্ত বাঙালিকে যুদ্ধক্ষেত্রে আর কোনো বাঙালি ডেকে আনেননি। কই, ভারতীয়রা তো নেতাজী সুভাস বসুকে অসম্মান করেনি। তার নামেবিমানবন্দর আছে। তাকে দলমত নির্বিশেষে শ্রদ্ধা করে। কিন্তু বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ এসব সংস্কৃতি ধংস করে দিয়েছে।রাজনীতিবিদদের প্রতি রাজনীতিবিদদের শ্রদ্ধা জানানোর যে প্রবণতা সেটা আওয়ামীলীগ বিলীন করে দিয়েছে। গুণিদের যদিআমরা সম্মান না করি আগামীতে কোনো গুণির জন্ম হবে না।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, শহীদ জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের আধুনিক উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা। তাঁর শাসনামল ছিল বাংলাদেশের স্বর্ণযুগ। কৃষি থেকে শুরু করে রেমিটেন্সসহ অর্থনীতির চাকা সচল হয়েছিল জিয়াউর রহমানের হাত ধরে। মহান মুক্তিযুদ্ধে যেভাবে নেতৃত্ব দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন সেভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করে বাংলাদেশকে উন্নত আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলেছেন। তাঁর ১৯ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারলে বাংলাদেশস্বয়ংসম্পূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাড়াতে পারতো । কিন্তু দেশি বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীদের কারণে তিনি তা করতে পারেনি।

জয়নাল আবেদিন ফারুক বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম জাতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান। বাংলাদেশের জন্ম, বিকাশ এবং স্বাধীনতাসার্বভৌমত্ব স্বনির্ভরতা অর্জন এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রতিটি ধাপের সাথে জড়িয়ে আছে তাঁর নাম।জাতির এক গুরুতর ক্রান্তিকালে ১৯৭১ সালে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে দেয়া তার ঘোষণার মাধ্যমে দেশের দিশেহারা মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুধু ঘোষণা দিয়েই তিনি ক্ষান্ত হলেন না, তিনি যুদ্ধে অবতীর্ণ হলেন, ফোর্স সংগঠিত করলেন, যুদ্ধাস্ত্র রণসম্ভার সংগ্রহ করলেন এবং প্রচসাহসিকতায় যুদ্ধ পরিচালনা করলেন। দেশকে স্বাধীন করতে এক বড় ভূমিকারাখলেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর সাহসী ভূমিকা এবং অসামান্য অবদানের কারণে তিনি বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত হন। ১৯৭৫সালে অভ্যুত্থানপাল্টা অভ্যুত্থানের ফলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সৃষ্ট ক্রমবর্ধমান অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে সিপাহিজনতার এক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাজনীতির ভরকেন্দ্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। স্বল্পসময়ের শাসনামলে নানা সঙ্কটে বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে উন্নতি সমৃদ্ধির এক বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে অধিষ্ঠিত করে তিনিই তিহাসে নিজের অক্ষয় স্থান নিশ্চিত করেন।

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি আহবায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম মুক্তিযুদ্ধের একটি বড় স্তম্ভ। এই স্থানের গুরুত্ব দেশের মানুষের কাছে অনেক বেশি।কারণ শহীদ জিয়াউর রহমান এখান থেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন। জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা দেশে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। কেউ চাইলেই এই ইতিহাস পরিবর্তন করতে পারবে না।

তিনি বলেন, জনগণের আহবানে দেশ জাতিকে পথ দেখানোর জন্য তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগগণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল কায়েম করেছিল। জিয়াউর রহমান সে একনায়কতন্ত্র তথা বাকশাল বিলুপ্ত করে বহুদলীয় ক্ষমতায়নের প্রবর্তন করেছেন। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে ৫টি মৌলিক ইস্যুকে ধংস করে দিয়েছে। বিএনপি তাফিরিয়ে দিয়ে জনগণের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটিয়েছে। দেশ পরিচালনায় আওয়ামী লীগ যেখানে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি সেখানে সফল হয়েছে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলহাজ্ব মোস্তাক আহমদ খানের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিতছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগিয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হারুণ অর রশিদ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, বক্তব্য রাখেন এম হালিম ,নুরুল আমিন ,নুর মোহাম্মদ,অধ্যাপক ইউনুস চৌধুরী,ইন্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন,অধ্যাপক জসিম

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com