সুপ্রিম কোর্ট বার: দুলালের সাথে কোনো সভায় উপস্থিত না থাকার সিদ্ধান্ত বিএনপিপন্থীদের

0

আইনজীবী আব্দুন নূর দুলাল অবৈধভাবে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সম্পাদকের পদ জবর-দখল করেছেন উল্লেখ করে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে বিএনপি থেকে নির্বাচিত সমিতির কার্যকরি কমিটির সাতজন সদস্য। একইসাথে আব্দুন নূর দুলালের সাথে কোনো সভায় উপস্থিত থেকে কোনো রেজুলেশনে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

সোমবার (১৬ মে) সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনে সমিতির বিএনপি থেকে নির্বাচিত সাত সদস্যের কার্যকরি কমিটির এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

কার্যকরী কমিটির সভার রেজুলেশনে বলা হয়েছে, সমিতির বিদায়ী ২০২১-২২ কমিটির সাতজন আওয়ামীপন্থী সদস্যের গত ৪ এপ্রিল তথাকথিত ১৫তম কার্যকরি কমিটির সভা এবং উক্ত অবৈধ সভায় তথাকথিত নির্বাচন সাব-কমিটি গঠন ও তাদের সকল কার্যক্রম অবৈধ মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। যেহেতু নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী আব্দুন নূর দুলালকে অবৈধ পন্থায় সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং তিনি অবৈধভাবে সম্পাদকের পদ জবর-দখল করেছেন, সেহেতু নিম্ন স্বাক্ষরকারীগণ কর্তৃক তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

কার্যকরি কমিটির সদস্য মাহদীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন সহ-সম্পাদক মাহফুজ বিন ইউসুফ। সভায় উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ কামাল হোসেন, সহ-সম্পাদক মো: মাহবুবুর রহমান খান, সদস্য গোলাম আকতার জাকির, মো: মঞ্জুরুল আলম সুজন ও মো: কামরুল ইসলাম।

রেজুলেশনে বলা হয়েছে, যেহেতু আব্দুন নূর দুলাল অবৈধভাবে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদকের পদ জবর-দখল করেছেন, তাই তার সাথে কোনো সভায় উপস্থিত থেকে কোনো রেজুলেশনে স্বাক্ষর না করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যেহেতু সম্পাদক পদের অবৈধ দখলদার আব্দুন নূর দুলালকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, সেহেতু সভাপতির সাথে কোষাধ্যক্ষের যৌথ স্বাক্ষরে চেক বা ভাউচার পাস এবং হিসাব পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সভায় উল্লেখ করা হয়, সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনের ভোট গণনা করা হয় গত ১৭ মার্চ। ভোট গণনায় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সমর্থিত প্যানেল থেকে সম্পাদক মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল, কোষাধ্যক্ষ, সহ-সম্পাদক দুইজন এবং চারজন সদস্যসহ মোট আটজন জয়লাভ করেন। বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত প্যানেল থেকে সভাপতি দুটি সহ-সভাপতি এবং তিনজন সদস্যসহ মোট ছয়টি পদে জয়লাভ করে। কিন্তু ভোট গণনা শেষ হওয়ার পর আওয়ামী পন্থী সম্পাদক প্রার্থী আব্দুন নূর দুলাল যখন জানতে পারেন যে, তিনি পরাজিত হয়েছেন, তখনই বহিরাগত গুন্ডা-পান্ডা ও সরকারি দলের কয়েকজন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল উদ্দেশ্যমূলকভাবে নির্বাচন সাব-কমিটি যাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করতে না পারে সেজন্যে নির্বাচন কমিশনের আহ্বায়ক এ ওয়াই মসিউজ্জামানসহ নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রেখে অকথ্য ভাষায় অপমানজনক কথা বলে বিশৃঙ্গখলা সৃষ্টি করে। আব্দুন নূর দুলাল ভোট পুনর্গণনার জন্য একটি দরখাস্ত নিয়ে এসে নির্বাচন কমিশনের আহ্বায়ককে ভোট পুনরায় গণনা করার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। এভাবে রাত ৩টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের আটকে করে রেখে ঘোষণা দিতে বাধ্য করেন যে পরের দিন ভোট রি-কাউন্টিংয়ের দরখাস্ত নিষ্পত্তি করা হবে। ফলে নির্বাচন কমিশনের আহ্বায়ক ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করতে পারেননি।

সভার রেজুলেশনে আরো উল্লেখ করা হয়, মেয়াদোউত্তীর্ণ কার্যকরী (২০২১-২২) কমিটির আওয়ামীপন্থী সাতজন সদস্য অবৈধভাবে গত ১২ এপ্রিল নির্বাচন সাব-কমিটি গঠন করেন। অথচ তাদের মেয়াদ ১১ এপ্রিল শেষ হয়ে যায়। উক্ত অবৈধ সাব-কমিটি ২৭ এপ্রিল অবৈধভাবে জোরপূর্বক সমিতির কনফারেন্স রুমের তালা ভেঙ্গে পুলিশের উপস্থিতিতে ব্যালট ছিনতাই করে আব্দুন নূর দুলালকে সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করে। পরে ওই কমিটি ঈদের ছুটির দিনে নিজেদের দলের লোক দিয়ে একটি তথাকথিত বার্ষিক সাধারণ সভার নামে নাটক সাজিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক পদকে বিতর্কিত করে নিজ দলের লোকদের দিয়ে অবৈধভাবে আব্দুন নূর দুলালকে সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com