অপ্রতিরোধ্য কিশোর গ্যাং দিনদিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে

0

অপ্রতিরোধ্য কিশোর গ্যাং দিনদিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রায় প্রতিদিনই পাড়া-মহল্লায় গ্রুপে গ্রুপে সংঘাত-সংঘর্ষ লেগেই আছে। গ্রুপগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিরোধও কম নয়। এমনকি এদের হাতে মাদক ও অস্ত্রের ঝনঝনানিও কম নয়। চাঁদাবাজিতে বড়দেরও টপকে যাচ্ছে এরা। তবে সবকিছু ছাপিয়ে বড় উদ্বেগের বিষয়-কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ভয়াবহ খুনাখুনির ঘটনাও ঘটছে।

গত দুইদিনে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও ভাটারায় গ্যাংয়ের আধিপত্যের বলি হয়েছে হোসেন ও শান্ত নামের দুই কিশোর। এর আগে ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে চাঞ্চল্যকর ও নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটেছে অনেকগুলো।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাম্প্রতিক অভিযানে বেশ কয়েকজন কিশোর অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এক্ষেত্রে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ বেশি জরুরি। সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতাই যথেষ্ট নয়, চূড়ান্ত দাওয়াই হচ্ছে অভিভাবকদের সচেতনতা।

খোদ পুলিশের হিসাবেই রাজধানীতে ৭৮টি গ্যাংয়ে প্রায় ২ হাজার সদস্য রয়েছে। এদের অর্ধশতাধিক শেল্টারদাতার তালিকাও করেছে পুলিশ। কিন্তু কাগজে-কলমের পরিসংখ্যান ছাড়া উল্লেখযোগ্য অ্যাকশন পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এ সুযোগে বেপরোয়া গ্যাং শুধুই বিস্তৃত হচ্ছে। ছড়িয়ে পড়ছে পাড়া-মহল্লায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্যাং কালচার রুখতে হলে আইনি কঠোরতার পাশাপাশি পারিবারিক শিক্ষা এবং সন্তানের প্রতি তীক্ষè নজরদারি খুবই প্রয়োজন। এখানে ব্যর্থ হলে শুধু কিশোর নয়, এই কিশোররা বড় হয়ে কুখ্যাত সন্ত্রাসীর খাতায় নাম লেখাবে, এরা পরিণত হবে সমাজের বিষফোড়ায়।

জানা যায়, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা খুনখারাবি থেকে শুরু করে মাদক, ছিনতাইসহ অন্তত ৮ ধরনের অপরাধ সংঘটিত করছে। এরা বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে উদ্ভট ধরনের বিভিন্ন নামে গ্রুপ তৈরি করে সংঘবদ্ধ হচ্ছে। ২০১৬ সালে উত্তরার আদনান কবির হত্যার পর এই ‘গ্যাং কালচারের’ বিষয়টি সামনে এলেও দিনদিন এর ব্যাপ্তি বেড়েছে। ১৫-১৭ বছর বয়সি প্রতিটি গ্রুপে সদস্যসংখ্যা ১৫-১৭ জন। তবে ১৮-২৪ বছর বয়সি গ্রুপও রয়েছে। মোহাম্মদপুর ও রায়েরবাজার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা, ছিনতাইসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছিল এলেক্স ইমন ও ডাইল্যা হৃদয় গ্রুপ। দুই গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে মারামারি লেগেই ছিল। এদের গ্যাংয়ের সদস্যদের কেউ গাড়ির হেলপার কিংবা চালক, কেউ কোনো গ্যারেজের মিস্ত্রি কিংবা ছোটখাটো শ্রমজীবী।

এদিকে ভাটারার নূরেরচালায় শনিবার রাতে ছুরিকাঘাতে নিহত শান্তর লাশের ময়নাতদন্ত রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে সম্পন্ন হয়েছে। পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, শান্ত নিজেও একটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। ঘটনার দুইদিন আগে ইমন নামের এক কিশোরের সঙ্গে তার বন্ধুদের ঝগড়া হয়। তারা ইমনকে মারধর করে। এ ঘটনার জেরেই ইমন ও তার লোকজন শনিবার রাতে নুরেরচালা মসজিদের সামনে শান্তকে পেয়ে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। এ ধরনের খুনাখুনির ঘটনা প্রায়ই ঘটছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com