‘১৯৭১ সালে ঈদের নামাজে পরনে ছিল ইউনিফর্ম হাতে অস্ত্র’

0

‘১৯৭১ সালে ঈদের দিন আমরা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে জকিগঞ্জে শ্রীমঙ্গলের উল্টো পাশে ছিলাম। প্রথম ইস্টবেঙ্গল আমাদের ছিল। সৈনিকদের সঙ্গে ঈদের নামাজ পড়েছি। ঈদের নামাজে পরনে ছিল ইউনিফর্ম হাতে ছিল অস্ত্র। যে কোনো সময় শত্রুরা আক্রমণ করতে পারে- সেই প্রস্তুতি নিয়ে আমরা ঈদের নামাজ আদায় করেছি।’

যুদ্ধদিনের ঈদস্মৃতি হাতড়ে কথাগুলো বলছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পর যুদ্ধদিনের সেই ঈদ নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন দলটির আরও দুই শীর্ষ নেতা মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

১৯৭১ সালের ২০ নভেম্বর ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়। একদিকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরোচিত অত্যাচার অন্যদিকে মুক্তিকামী বাঙালি জনতার সর্বাত্মক প্রতিরোধ। এমন পরিস্থিতি সে সময় ঈদ উদযাপন হয়। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তখন ২৭-২৮ বছরের যুবক।

মির্জা ফখরুল বলেন, ঈদের দিন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম দিনাজপুরের ইসলামপুর মহকুমা সদরে আমরা ছিলাম। তখন ঈদ ছিল আমাদের কাছে কষ্টদায়ক। তখন পরিবার বলতে মা-বাবা ভাই-বোন ছিলেন। ছোট্ট একটা ভাড়া করা বাসায় আমার ফ্যামিলি থাকতো। ঈদের জামাতে ওখানে নামাজ পড়তে গেছিলাম। যুদ্ধের সময়ে উদ্বাস্তু হয়ে বিদেশে ছিলাম। স্পেশাল কিছু ছিল না।

খাবার প্রসঙ্গ জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোথায় খাবো? সাধারণ রেশনের ভাত ডাল ভর্তাই ছিল খাবার।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রমে অভিজ্ঞতা ছিল আবার ভিন্ন। তিনি ছিলেন সম্মুখসারির যোদ্ধা। স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, তখন আমার ২৬ বছর বয়স। ব্যাচেলর ছিলাম। পরিবার-পরিজন জানতো না আমরা বেঁচে আছি কি না, আমরাও জানতাম না তারা বেঁচে আছে কি না। ঈদের জামাতে আমরা শপথ নিয়েছিলাম দেশকে স্বাধীন করবো। তার কিছুদিন পরেই দেশ স্বাধীন হলো। যুদ্ধে আমাদের ব্যাটালিয়নের আড়াইশো সৈনিক নিহত হন। যে কারণে ওই ঈদ আমাদের কাছে অত্যন্ত স্মরণীয়।

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসীদের সংগঠিত করতেন বলে জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে গবেষণার জন্য লন্ডনে ছিলেন তখন। ২৬-২৭ বয়স।

সে সময়ের ঈদের দিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশে যে কনসেপ্টে ঈদ হয় তখন লন্ডন, ইস্ট লন্ডনে সেভাবে ঈদ হতো না। তখন আমাদের যে মন-মানসিকতা ওই সময়ে আমাদের ঈদ ছিল না। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রবাসে আমাদের যে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড ছিল তার মধ্যে ঈদ বড় হয়ে ওঠেনি। আমরা সেভাবে ঈদ উদযাপন করিনি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com