ই-সিগারেটে গ্রাস করছে তরুণ সমাজকে

0

ই-সিগারেটে গ্রাস করছে তরুণ সমাজকে। এতে উদ্বিগ্ন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস (ভ্যাপিং, ই-সিগারেট)-এর আবির্ভাবের পর থেকে বিশ্বব্যাপী তামাক ব্যবহারের পদ্ধতি ও ব্যবহার, বিপণন কৌশল, তামাক আসক্তি সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গি এবং তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু প্রভৃতি ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। কৌশলী প্রচার-প্রচারণার কারণে এসব পণ্যের জনপ্রিয়তা এবং ব্যবহার বর্তমানে আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ইতিমধ্যে অনেক দেশ ই-সিগারেট ও ভ্যাপিং পণ্য নিষিদ্ধ করেছে। বাংলাদেশে দাবি উঠেছে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে অবশ্যই ই-সিগারেট বন্ধে আইন প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

রাস্তাঘাট, ক্যাম্পাস, তরুণদের আড্ডাস্থল, বিভিন্ন মার্কেট এবং রাস্তার মোড়ে গড়ে ওঠা ভ্যাপিং ক্লাবে এসব পণ্যের ব্যবহার ব্যাপকহারে চোখে পড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান বাজারে মোট দুই ধরনের ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্ট পাওয়া যায়। ইলেক্ট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম্‌স এবং হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট। ইলেক্ট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম্‌স এক ধরনের ব্যাটারিচালিত ডিভাইস যা ই-লিক্যুইড বা নিকোটিনযুক্ত তরল দ্রবণকে তাপের মাধ্যমে বাষ্পে রূপান্তরিত করে। একজন ব্যবহারকারী যখন ডিভাইসটিতে টান দেয়, তখন নিকোটিনের দ্রবণ গরমে বাষ্পীভূত হয় এবং ব্যবহারকারীকে নিকোটিন সরবরাহ করে।

নিকোটিন ছাড়াও নানারকম রাসায়নিক মিশ্রণ এবং সুগন্ধি মেশানো থাকে, যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ইলেক্ট্রনিক সিগারেট বা ই-সিগারেট, ভ্যাপ বা ভ্যাপ পেনস্‌?, ই-হুক্কা, ই-পাইপ এবং ই-সিগার প্রভৃতি এন্ডস্‌? পণ্যের বিভিন্ন ধরন। সাধারণ সিগারেট বা পাইপ আকৃতি ছাড়াও এগুলো দেখতে কলম, পেনড্রাইভ, বিভিন্ন খেলনা কিংবা সিলিন্ডার আকৃতির হয়ে থাকে।

পড়ন্ত এক বিকাল বেলায় ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরবরে আড্ডা দিচ্ছিলেন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে পড়ুয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে দু’জন ই-সিগারেট টানছিলেন। কিছুক্ষণ পরপর মুখ দিয়ে পাফ নিচ্ছেন আর মুখ থেকে অনেক ধোঁয়া ছাড়ছেন। জানতে চাইলে একজন জানান, ই-সিগারেটের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে তার তেমন জানা নেই। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় থাকলে তিনি ই-সিগারেট টানেন। তার মতে, এটা সিগারেটের চেয়ে কিছুটা ‘নিরাপদ’। তাই তিনি টানছেন।

দেশের বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান এ ব্যাপারে বলেন,  ই-সিগারেটে স্বাস্থ্যের অনেক ঝুঁকি রয়েছে। এতে তরল নিকোটিন থাকে। এটা শিক্ষার্থীরা বেশি ব্যবহার করছে। প্রথম থেকেই উদ্যোগ নিয়ে এটাকে বাড়তে দেয়া যাবে না। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আইন করে এটি বন্ধ করা হয়েছে। এই বিশেষজ্ঞ বলেন, আইন সংশোধন করে এটি  এখনই বন্ধ করা দরকার। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে। এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়তে হবে বলেও তিনি মনে করেন।

অতি সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) প্রকাশিত WHO Report on Global Tobacco Epidemic ২০২১ এ ইলেক্ট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেমস (ENDS) অর্থাৎ ই-সিগারেটসহ সকল ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টকে স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর পণ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো আসক্তিসহ নানাবিধ স্বাস্থ্য ক্ষতি তৈরি করে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে যারা এসব পণ্যে আসক্ত তাদের মধ্যে সিগারেট শুরু করার সম্ভাবনা দ্বিগুণেরও বেশি। অর্থাৎ, ইলেক্ট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি প্রোডাক্ট তামাকপণ্য ব্যবহারের ‘gateway’ হিসেবেও কাজ করে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ইউএস সার্জন জেনারেল রিপোর্ট ২০১৬ এ ই-সিগারেটসহ নিকোটিনযুক্ত সকল পণ্যকে ‘অনিরাপদ’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। বিশেষ করে ২০১৯ সালে ই-সিগারেট বা ভ্যাপিং-সৃষ্ট শ্বাসযন্ত্রের জটিলতা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে মহামারির আকার ধারণ করলে এই ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টসগুলোর সত্যিকারের চেহারা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ পর্যন্ত দেশটির বিভিন্ন হাসপাতালে ফুসফুসজনিত রোগে ভর্তি হওয়া মোট ২ হাজার ৮০৭ জন রোগী এবং এরমধ্যে ৬৮ জনের মৃত্যুর সঙ্গে ই-সিগারেট/ভ্যাপিংয়ের যোগসূত্র থাকার কথা নিশ্চিত করেছে।

কোভিড-১৯ এবং ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, তামাক এবং ভ্যাপিং পণ্য ব্যবহারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় এবং অধূমপায়ীদের তুলনায় ধূমপায়ীদের কোভিড-১৯ সংক্রমণে মারাত্মকভাবে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। ই-সিগারেট এবং ভ্যাপিংয়ের এর ধোঁয়ায় নিকোটিন এবং অন্যান্য বিষাক্ত কেমিক্যাল থাকে যা ব্যবহারকারী এবং এর পরোক্ষ ধূমপানের শিকার উভয়ের জন্যই মারাত্মক ক্ষতিকর। এগুলো ব্যবহারকারীর ফুসফুসের সংক্রমণ ও অসুস্থতা বাড়ায় এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়, যা করোনাভাইরাস সংক্রমণে অত্যন্ত গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে।

শিশু-কিশোর এবং তরুণরাই মূল টার্গেট: মূলত তরুণ এবং শিশুদের টার্গেট করে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এসব ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস উৎপাদন ও বাজারজাত করছে তামাক কোম্পানিগুলো। উদ্ভাবনী কৌশল, সুগন্ধি ব্যবহার এবং আকর্ষণীয় ডিজাইনের কারণে কিশোর এবং তরুণদের মাঝে বিশেষত বিদ্যালয়গামী শিশুদের মধ্যে এসব তামাকপণ্যের জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডব্লিউএইচও এর ২০২১ সালের তথ্য মতে, বাজারে ১৬ হাজার ধরনের স্বাদ/গন্ধযুক্ত (ফ্লেভার) ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস রয়েছে। ইউরোপ, আমেরিকাসহ বেশকিছু দেশে এসব পণ্যের ব্যবহার ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। আমেরিকায় পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে মাত্র ১ বছরের ব্যবধানে আমেরিকায় স্কুলপড়ুয়া তরুণদের মধ্যে ই-সিগারেট ব্যবহার ৭৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। হাইস্কুল পড়ুয়া তরুণদের ৮৫ শতাংশই বিভিন্ন সুগন্ধিযুক্ত ই-সিগারেট ব্যবহার করে। কারণ এসব স্বাদ বা গন্ধ তাদের পছন্দ।

তারুণ্যনির্ভর বাংলাদেশ এখন তামাক কোম্পানির মূল টার্গেট:   বাংলাদেশেও ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টসের ব্যবহার তরুণ এবং যুব সমাজের মধ্যে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। রাস্তাঘাট, ক্যাম্পাস, তরুণদের আড্ডাস্থল, বিভিন্ন মার্কেট এবং রাস্তার মোড়ে গড়ে ওঠা ভ্যাপিং ক্লাবে এসব পণ্যের ব্যবহার ব্যাপকহারে চোখে পড়ছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য বিক্রয় কেন্দ্র। অনলাইন এবং ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ই-সিগারেট সামগ্রী নিয়ে আলোচনা, বিক্রয় ও হাতবদল হচ্ছে। তবে এসব পণ্য ব্যবহারের মাত্রা কতোটা বিস্তার লাভ করেছে সে বিষয়ে সর্বশেষ কোনো গবেষণালব্ধ তথ্য-উপাত্ত নেই। গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (এঅঞঝ) ১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর মধ্যে পরিচালিত হয় বলে এই গবেষণার মাধ্যমে ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্ট ব্যবহারে প্রকৃত চিত্র পাওয়া কঠিন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২০১৭ সালে পরিচালিত এঅঞঝ অনুযায়ী বাংলাদেশে ১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর মধ্যে ই-সিগারেট ব্যবহারের হার ০.২ শতাংশ। সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৪৯ শতাংশই তরুণ, যাদের বয়স ২৪ বছর বা তার নিচে। অর্থাৎ বাংলাদেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট সময়কাল অতিবাহিত করছে যেখানে, নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর তুলনায় কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেশি। এই ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট সাধারণত ৩৫ থেকে ৪০ বছর দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে। একটি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং ইতিবাচক পরিবর্তনে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট জনগোষ্ঠীর অবদান অতি গুরুত্বপূর্ণ। তামাক কোম্পানিগুলোও এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে এই বিশাল তরুণ জনগোষ্ঠীকে যেকোনো উপায়ে তামাকপণ্য ও ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্ট এ আসক্ত করে নিজেদের ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং মুনাফা বৃদ্ধি করতে চায়। এ জন্য তারা ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস অর্থাৎ ইলেক্ট্রনিক সিগারেট, ভ্যাপিং, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট ইত্যাদিকে সিগারেটের ‘নিরাপদ বিকল্প’ হিসেবে ভোক্তা এবং নীতিনির্ধারকদের সামনে উপস্থাপন করে থাকে। ৪৯ শতাংশ তরুণ জনগোষ্ঠীর ওপর নির্ভর করে তামাক কোম্পানি চায়-এই তরুণ জনগোষ্ঠীকে যেকোনো উপায়ে তামাকপণ্য ও ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্ট এ আসক্ত করে নিজেদের ব্যবসা সমপ্রসারণ এবং মুনাফা বৃদ্ধি করতে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ইলেক্ট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম ট্রেডার্স এসোসিয়েশন (বিইএনডিএসটিএ)-এর সহ-সভাপতি সানাউল হক বলেন, এটা সিগারেটের চেয়ে ভালো। ২০১৩ সাল থেকে এই ব্যবসা করছি। তবে করোনার সময় ব্যবসা মন্দা ছিল। তিনি ধারণা দিয়ে বলেন, সারা দেশে ভ্যাপিং কাস্টমার আর কতো হবে ৫ লাখ। কিন্তু তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি।
তামাক বিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা) বলেছে, ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টের ক্রমবর্ধমান ব্যবহার ও ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাংলাদেশের তরুণ ও যুব সমাজকে রক্ষা করতে ই-সিগারেটসহ সকল ভ্যাপিং এবং হিটেড তামাকপণ্যের উৎপাদন, আমদানি ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করতে হবে। এ ছাড়াও নিয়মিত মনিটরিং এবং জরিপ/গবেষণার মাধ্যমে আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সহায়তা করতে হবে। ইতিমধ্যে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ই-সিগারেট নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

এ ছাড়াও শ্রীলঙ্কা, নেপাল, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ ৩২টির অধিক দেশ এসব পণ্য নিষিদ্ধ করেছে। সুতরাং তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে এই বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে হবে। ই-সিগারেট এবং হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট (এইচটিপি) বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হলে তরুণ এবং কিশোর বয়সীদের ধূমপানে আসক্ত হওয়া থেকে বিরত রাখা যাবে, যা ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে সহায়তা করবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ ই-সিগারেটের বিরোধিতা করে বলেন, আইনটি পরিবর্তনের কথা বলেছি। আশা করি, পরিবর্তন হবে এবং তরুণ সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী হোসেন আলী খোন্দকার বলেন, তামাক নিয়ে আইনের যে সংশোধন হচ্ছে তাতে সব পক্ষই ই-সিগারেট এবং হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট (এইচটিপি)-এর বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলেছেন। ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করার সুপারিশ থাকছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষও এই বিষয়ে বিবেচনায় নিবে। শিগগিরই খসড়ায় তা দেখতে পাবেন।

বাংলাদেশে ৩৫ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ (GATS, ২০১৭) প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারকারী ২ কোটি ২০ লাখ (২০ দশমিক ৬ শতাংশ) এবং ধূমপায়ী ১ কোটি ৯২ লাখ (১৮ শতাংশ)। বাংলাদেশে ১৩-১৫ বছর বয়সী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৯ দশমিক ২ শতাংশ (GSHS, ২০১৪), যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তামাক ব্যবহারজনিত রোগে দেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করে। ২০১৯ সালে প্রকাশিত ‘ইকোনমিক কস্ট অব টোব্যাকো ইউজ ইন বাংলাদেশ: এ হেলথ কস্ট অ্যাপ্রোচ’ শীর্ষক গবেষণা ফলাফলে দেখা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির (চিকিৎসা ব্যয় এবং উৎপাদনশীলতা হারানো) পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com