রেমিটেন্স কমতে থাকলে চাপ পড়বে রিজার্ভে

0

বিশ্বব্যাপী মহামারির কারণে বিধিনিষেধ শিথিল করার সঙ্গে সঙ্গে হুন্ডির মতো অবৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে অর্থ পাঠানো শুরু করেছেন প্রবাসীরা। এ কারণে নভেম্বর মাসে বাংলাদেশে রেমিটেন্স প্রবাহ আরও কমেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের দেশে পাঠানো অর্থের পরিমাণ ২০২১ সালের নভেম্বরে ১ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ বা ৯৩ দশমিক ১৭ মিলিয়ন কম।

চলতি বছরের অক্টোবরে রেমিটেন্সের পরিমাণ ছিল ১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন। ২০২০ সালের নভেম্বরে রেমিটেন্স এসেছিল ২ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলার।

পরিসংখ্যান আরও দেখায় যে রেমিটেন্সের অভ্যন্তরীণ প্রবাহ চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে রেমিটেন্স প্রায় ২১ শতাংশ কমে ৮ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ে ১০ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় পর্যালোচনাধীন সময়ে রেমিটেন্স প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকার অভ্যন্তরীণ রেমিটেন্সের সর্বশেষ প্রবণতা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, তবে রেমিটেন্সের প্রবাহ প্রাক-কোভিড-১৯ সময়ের বিবেচনায় প্রায় স্থিতিশীল ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য দেখায়, ২০১৯ সালের নভেম্বরেও বাংলাদেশে ১ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতে, রেমিটেন্স প্রবাহ ত্বরান্বিত করার জন্য বর্তমানে ২৯টি এক্সচেঞ্জ হাউস সারাবিশ্বে কাজ করছে, বিদেশে প্রায় ১ হাজার ৫০০ শাখা স্থাপন করছে।

তবে বাজার পরিচালনকারীরা বলছেন, আনুষ্ঠানিক ব্যাংকিং চ্যানেল বাংলাদেশ টাকার বিপরীতে মার্কিন ডলারের বিনিময় হারের মধ্যে উচ্চ ব্যবধান সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অবৈধ হুন্ডি কার্যক্রমকে উৎসাহিত করেছে।

বর্তমানে খোলা বাজারে নগদ ডলারের বিনিময় হার এবং রেমিটারদের জন্য টেলিগ্রাফিক ট্রান্সফার (টিটি) ক্লিন রেটের মধ্যে প্রায় ৫ টাকার ব্যবধান রয়েছে।

বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেডা) দৈনিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বুধবার (১ ডিসেম্বর) ব্যাংকগুলো টিটি-এর জন্য প্রেরকদের জন্য গড় হার ছিল ৮৪ দশমিক ৮৫ টাকা।

অন্যদিকে সম্প্রতি চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মার্কিন মুদ্রা খোলা বাজারে প্রায় ৯০ টাকায় লেনদেন হয়েছে।

একটি নেতৃস্থানীয় বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত, এ ধরনের বিনিময় হারের ব্যবধান কমাতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া, যা রেমিটেন্সের প্রবাহকে পুনর্গঠন করতে সহায়তা করবে।

বেসরকারি ব্যাংকার আরও ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে হুন্ডি কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে রেমিটেন্সের বিদ্যমান পতনের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর আগে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে সাহায্য করার জন্য অবৈধ ‘হুন্ডি’ সিস্টেমের পরিবর্তে আনুষ্ঠানিক ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের তাদের কষ্টার্জিত অর্থ পাঠাতে উৎসাহিত করার জন্য একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল।

সেদিনের হিসাবে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৪ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার।

আর্থিকখাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে রেমিটেন্স প্রবাহ কমার কারণে রিজার্ভ চাপ অনুভব করবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com