শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ‘বীরউত্তম’ জড়িয়ে আছেন বাংলাদেশের সমগ্র অস্তিত্বের সঙ্গে

0

বাংলাদেশের অগ্রগতিকে থামিয়ে দিতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের ফলে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালের ৩০ মে কিছু বিপথগামী সৈন্যের হাতে শহীদ হন। আমাদের ইতিহাসের যুগসন্ধিক্ষণের এক ব্যতিক্রমী চরিত্র শহীদ জিয়া।

বাংলাদেশের এই অমিততেজা বীর যোদ্ধা সফল রাষ্ট্রনায়ক শুধু এ দেশের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্কই নন, আধিপত্যবাদবিরোধী সংগ্রামের একজন কাণ্ডারিও। এবং
জিয়াউর রহমানের মধ্যে অনেক বৈশিষ্ট্য ও গুণের সমাবেশ ছিল।

১৯৭০ সালের পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের নির্বাচনের পর সেনা আমলাতন্ত্র সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করে। সামরিক আমলাতন্ত্রের সাথে ষড়যন্ত্রে মিতালি গড়ে তোলেন পিপিপি নেতা ভুট্টো। ক্ষমতার লড়াইয়ে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ হয় অনিবার্য। মেজর জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দেন। ১৯৭৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর জিয়াউর রহমান ভারত সফরকালে ভোজসভায় ভারতের তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট সঞ্জীব রেড্ডি বলেন, ‘Your position is already assured in the annals of the history of your country as a brave freedom fighter, who was the first to declare the independence of Bangladesh. (সূত্র : অধ্যাপক শামসুল হকের Bangladesh in International politics, Page-96)

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ১৯৭১ সালের ৬ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণদানকালে মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে বলেন, ‘The other country has pushed across the border people who did not Vote for their Government, but voted for the regime they wanted. There is no other crime which these people have committed, because they cry for independence arose after Sheikh Mujib was arrrested and not before. He himself, so far as I know has not asked for independence even now.’ (সূত্র : Bangladesh documents, Information ministry, Govt of India, Vol-ll, page-275)। এই বক্তব্যে ইন্দিরা উল্লেখ করেন মরহুম শেখ মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি।

প্রখ্যাত আইনজীবী এবং মুজিব সরকারের খাদ্য প্রতিমন্ত্রী ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম বলেন, ঢাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় পদ্মাতীরের আগারগাঁও গ্রামে বসে আমি এবং তাজউদ্দীন আহমদ জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা শুনেছিলাম। মেজর জিয়ার আহ্বান বেসামরিক-সামরিক তথা বাংলার সর্বশ্রেণীর মানুষকে উজ্জীবিত করে। (সূত্র : স্বাধীনতাযুদ্ধের দলিলপত্র, ১৫ খণ্ড, পৃষ্ঠা-৯৫)। এ ছাড়া সাংবাদিক জহুর হোসেন চৌধুরী ও জাতীয় অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান সহ অনেকের লেখনী ও বক্তব্যে শহীদ জিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণার শতশত প্রমাণ পাওয়া যায়।

এছাড়াও শহীদ জিয়া শুধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি, মুক্তিযুদ্ধকালে শুধু সেক্টর কমান্ডার হিসেবে নন, তিনটি সেক্টর সমন্বয়ে গঠিত জেড-ফোর্সের অধিনায়ক হিসেবে অস্ত্র হাতে রণাঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধ করেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি ডালিয়া লাকুরিয়া জন্মগ্রহণ করিনি, কিন্তু ইতিহাসবিদদের রচিত ইতিহাস থেকে যতটুকু জানতে ও উপলব্ধি করতে পেরেছি, স্বাধীনতার ঘোষক, মুক্তিযুুদ্ধের সংগঠক ও সেক্টর কমান্ডার, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা, বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠাতা, আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি, ইসলামি উম্মাহর ঐক্যপ্রচেষ্টার অগ্রদূত, সার্কের স্বপ্নদ্রষ্টা, তৃতীয় বিশ্বের অবিসংবাদিত নেতা ও আধিপত্যবাদবিরোধী বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর এবং সফল রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন জিয়াউর রহমান।

সুতরাং মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের অবদান অস্বীকার করার কোনও সুযোগ নেই। এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ‘বীরউত্তম’কে অস্বীকার করা হলে দেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধকেই অস্বীকার করা হবে।

পরিশেষে বিজয়ী জাতির বিজয়ী নেতা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীরউত্তম এর স্মৃতির প্রতি সশ্রদ্ধ সালাম জানিয়ে বলতে চাই প্রতিহিংসা ও বিদ্বেষের রাজনীতি এবং আদালতের রায় দিয়ে দেশের জনগণের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে নেয়া ইতিহাস সৃষ্টিকারীদের ইতিহাস জনগণের হৃদয় থেকে বদলানো যায়নি পূর্বেও, যাবে না ভবিষ্যতেও ইনশাআল্লাহ।

-ডালিয়া লাকুরিয়া

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com