সরকার অবলীলায় জনগণকে ভুল তথ্য দিয়ে প্রতারণা করছে: মির্জা ফখরুল

0

লকডাউনের মধ্যে হঠাৎ করেই রফতানিমুখী কলকারখানা খুলে দেয়ার সরকারের সিদ্ধান্তকেপুরোপুরি আত্মঘাতীবলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রবিবার ( আগস্ট) দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আপনারা আজকের পত্রিকা গুলোতে দেখেছেন কী ভয়াবহ অবস্থা? কী রকম তুঘলগি কারবারআগে বলা হলো যে, করখানা খোলা হবে না, তারিখ পর্যন্তই বন্ধ থাকবে। আবার হঠাৎ করেই বলা হলোকলকারখানা খোলাহবে। কী করে লোকগুলো আসবে তার কোনও ব্যবস্থা নেই। আবার দেখা যাচ্ছে, রাত্রিবেলা বলছে যে, না, দুপুর ১২টা পর্যন্ত গণপরিবহন খোলা থাকবে।

তিনি বলেন, ‘আমি কি এমনি বলেছিলাম যে, এগুলো আসতেছে সব হেমায়েতপুর থেকে। আসলেই তো ! সব হেমায়েতপুরের অবস্থা। এখানে বদ্ধ উন্মাদনা ছাড়া আমি কিছু দেখতে পাই না। বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে যে, অযোগ্যতা, দুর্নীতিপরায়নতা এবং আন্তরিকতার চরম অভাবে এসব আত্মহননকারী সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করছে। দিস ইজ টোটালিসুইসাইডাল।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকের পত্রিকা দেখে তো সন্ত্রস্ত হয়ে যেতে হয়। যেভাবে মানুষ আসছে একেবারে গাদাগাদি করে, ঘাড়েরউপরে চড়ে এবং সেভাবে এসে কিভাবে একবার তাদের ছুটি দিলো, সব চলে গেলো। আবার ফিরছে তারা মফস্কল থেকে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখন তো মফস্বলেই সংক্রমণ সবচেয়ে বেড়েছে। ওইগুলো নিয়ে তারা আবার ফিরে আসছে। সো উইআন্ডারস্ট্যান্ড কি হতে যাচ্ছে ঢাকাতে। আমরা মনে করি, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় চরম ব্যর্থতার জন্য সকল দায়দায়িত্বনিয়ে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।

গতকাল শনিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্তসমূহ তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকারেরে অপরিকল্পিত লকডাউনে জনগণের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। বিএনপি অনেকবার বলেছে যে, দিন আনে দিন খায় মানুষ, প্রান্তিক মানুষ, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, মাঝি, রিকশা শ্রমিক, ভ্যান শ্রমিকসহ সকল প্রকার নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য সহায়তা আর্থিক সহায়তাব্যতিত লকডাউন কখনই কার্যকর হবে না। সেজন্যই বিএনপি এসব মানুষদের এককালীন ১৫ হাজার টাকা অনুদান হিসেবে প্রদানের প্রস্তাব করেছিলো। সরকার সেদিকে না গিয়ে দলীয় লোকদের আড়াই হাজার টাকা করে প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রকৃতদুর্গত মানুষের কাছে এই সহযোগিতা পৌঁছাচ্ছে না

তিনি বলেন, ‘উপরন্তু হঠাৎ করে রফতানিমুখী কলকারখানা খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তে কলকারখানায় কর্মরত শ্রমিকেরা আরও মারাত্মক ভোগান্তির সম্মুখীন হয়েছে। একদিকে গণপরিবহন বন্ধ অন্যদিকে কারখানায় কাজে যোগ দেয়ার নির্দেশে তারা হতবিহ্বল হয়ে পড়েছে এবং চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। প্রায় সব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা প্রহসন ছাড়া আর কিছু নয়। ঢাকার বাইরেএই শ্রমিকরা এবং ঢাকার জনগণ ডেল্টা ভেরিয়েন্টের ভয়াবহ সংক্রমণের শিকার হবার সম্ভাবনা বাড়ছে।

টিকা নিয়ে সরকার প্রতারণা করছেমন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সরকার অবলীলায় জনগণকে ভুলতথ্য দিয়ে প্রতারণা করছে। সরকার বলছে, প্রতি সপ্তাহে ৬০ লক্ষ টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। অথচ গত মাসেও ৬০ লক্ষটিকা দিতে পারেনি। টিকা প্রাপ্তির কোনও নিশ্চয়তা ছাড়াই প্রতি মাসে কোটি টিকা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে তারা (সরকার), যাজনগণের সঙ্গে প্রতারণা ব্যতিত কিছুই নয়।

তিনি বলেন, ‘প্রতি মাসে কোটি টিকা প্রদানের জন্য টিকা প্রাপ্তির উৎস সরকার এখন পর্যন্ত জানাতে পারেনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর টিকানিয়ে এসব উক্তি এখন হাস্যকর। এগুলো যে ফাঁকা বুলিএটা বুঝতে আর জনগণের বাকি নেই। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায়ফাঁকা বুলি না আওড়িয়ে অবিলম্বে টিকা সংগ্রহ, সংরক্ষণ বিতরণের সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ জনগণের সামনে তুলে ধরার আহ্বানজানানো হয়।

সরকার উদ্দেশ্যমূলকভাবে সংক্রমণ মৃত্যুর সংখ্যার প্রকৃত পরিসংখ্যান না দিয়ে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেঅসত্য তথ্যদিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ডা. রফিকুল ইসলাম, তাইফুল ইসলাম টিপু, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের (ড্যাব) অধ্যাপক হারুনআল রশিদ অধ্যাপক আব্দুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com