যে ৪ গুণের অধিকারীরা হতাশামুক্ত
যে ৪ গুণের অধিকারীরা হতাশামুক্ত
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যদি তোমার মধ্যে ৪টা সিফাত বা গুণ থাকে, তাহলে দুনিয়া জীবনে কীআছে, কী নেই কিংবা পরকালীন জীবনে কী পাবে; এটা নিয়ে ওই বান্দার পেরেশান বা হতাশা হওয়ার দরকার নেই। কী সেই ৪গুণ?
দুনিয়ায় মানুষের অনেক হতাশা কিংবা না পাওয়ার বেদনা থাকে। আবার পরকালেও মানুষের এ না পাওয়ার বেদনা থাকবে; যারাদুনিয়াতে ভালো কাজ করে যেতে পারেনি। দুনিয়া ও পরকালে হতাশা ও না পাওয়ার বেদনা থেকে মুক্ত থাকতে ৪টি গুণের অধিকারী হওয়ার কথা বলেছেন বিশ্বনবি। হাদিসে এসেছে–
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন–
أَرْبَعٌ إِذَا كُنّ فِيكَ فَلَا عَلَيْكَ مَا فَاتَكَ مِنَ الدُّنْيَا: حِفْظُ أَمَانَةٍ، وَصِدْقُ حَدِيثٍ، وَحُسْنُ خَلِيقَةٍ، وَعِفّةٌ فِي طُعْمَةٍ.
দুঃশ্চিন্তা মুক্তির ৪ টি জিনিস বা গুণ হলো–
১. حِفْظُ أَمَانَةٍ : হিফজু আমানাতিন
আমানত রক্ষা করা। খিয়ানত না করা। এ আমনত শুধু টাকা–পয়সা গ্রহণ করায় সীমাবদ্ধ নয় বরং যে কোনো ধরনের ভেজাল, কোনো ধরনের দুর্নীতিতে না জড়ানো। অন্যের হক নষ্ট না করা। নিজের দায়িত্বে অবহেলা না করা। বিষয়টা কিন্তু অনেক ব্যাপক।সুতরাং হিফজু আমানাতিন বা আমানত রক্ষা করা। কোনো ভাবেই আমানতের খিয়ানত না করা।
২. صِدْقُ حَدِيثٍ : ছিদ্কু হাদিসিন
সত্য বলা। সত্যবাদিতার মাধ্যমেই মানুষের জান্নাত রাস্তা তৈরি হয়। তাই পরিস্থিতি যত কঠিনই হোক না কেন সব সময় সত্য কথাবলার বিকল্প নেই। সত্য কথার দ্বারাই মিথ্যা অপসারিত হয়। আর সব পাপের জননি মিথ্যা বিতাড়িত হলে সফলতা আসবেই।
৩. حُسْنُ خَلِيقَةٍ : হুসনু খালিকাতিন
আখলাক–চরিত্র সুন্দর এবং ব্যবহার সুন্দর হওয়া দুনিয়া ও পরকালের সফলতার জন্য সবচেয়ে বড় মাধ্যম। চরিত্র পবিত্র হওয়া, ভালো হওয়া। মানুষের সাথে ব্যবহার সুন্দর হওয়া। এটাকে বলে হুসনু খালিকাতিন। হতাশামুক্ত হওয়ার অন্যতম উপায় এটি।
৪. عِفّةٌ فِي طُعْمَةٍ : ইফ্ফাতুন ফি তুমাতিন
খাবার হালাল হওয়া। রিজিক হালাল হওয়া। ইবাদত কবুলের পূর্বশর্তই হচ্ছে হালাল রিজিক। যার পেটে হালাল রিজিক থাকবে তার দুনিয়ার প্রতিটি কাজে থাকে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্বস্থি। আর পরকালের মুক্তি হবে একেবারেই সহজ।
যে কারণে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ৪ গুণের অধিকারী বান্দাকে দুনিয়া ও পরকলের সব চিন্তা থেকে মুক্ত থাকার নিশ্চয়তা দিয়েছেন।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, ৪টা বিষয়– সব সময় আমানত রক্ষা করে চলা, সদা সত্য বলা, স্বভাব–চরিত্র ও আচার–ব্যবহারভালো রাখা আর হালাল জীবিকা বা আয়–উপজর্ন দ্বারা খাবার গ্রহণ করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসে ঘোষিত ৪ গুণের অধিকারী হওয়ার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া ও পরকালের দুঃশ্চিন্তা থেকে মুক্ত রাখুন। আমিন।