করোনাবন্দি সময়ে মুমিনের করণীয়

0

সুখদুঃখ, হাসিকান্না, দুঃখবেদনা আনন্দব্যর্থা সবই মানুষের জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িত। মহামারি করোনার সময়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি হাদিস মুসলিম উম্মাহর জন্য শ্রেষ্ঠ উপদেশ। তিনি দারুণ একসান্ত্বনার বাণী কল্যাণের নসিহত তুলে ধরেছেন এভাবে

عَجَبًا لِأَمْرِ الْمُؤْمِنِ، إِنَّ أَمْرَهُ كُلَّهُ خَيْرٌ، وَلَيْسَ ذَاكَ لِأَحَدٍ إِلّا لِلْمُؤْمِنِ، إِنْ أَصَابَتْهُ سَرَّاءُ شَكَرَ، فَكَانَ خَيْرًا لَهُ، وَإِنْ أَصَابَتْهُ ضَرَّاءُ، صَبَرَ فَكَانَ خَيْرًالَهُ

(সুখেদুঃখে) ঈমানদারের অবস্থা কী অপূর্ব! তার সবকিছুই তার জন্য কল্যাণের। আর শুধু মুমিনেরই বৈশিষ্ট্য। যদি সে সুখসচ্ছলতা পায় তাহলে (আল্লাহর) শোকর করে, ফলে তা তার জন্য কল্যাণের হয়। আবার যদি দুঃখঅনটনের শিকার হয় তাহলে সবর করে, ফলে তা তার জন্য কল্যাণের হয়।’ (মুসলিম)

ভলো মন্দ পরিস্থিতিতে শোকর সবরের পাশাপাশি মুমিন মুসলমানের জন্য রয়েছে বেশ কিছু ভালো কাজের সুযোগ। এমন অনেকে রয়েছে, যারা কর্মব্যস্ততার কারণে অনেক কাঙ্ক্ষিত কাজ করতে পারে না। সে কারণে মহামারি করোনার সময়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ সুন্দরভাবে সম্পাদন করার সুযোগ রয়েছে।

করোনার অবসরে মুমিনের কাজ

বর্তমান মহামারি করোনার প্রাদুর্ভাব দুর্যোগ পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে তা একটি বিপদ। এই বিপদে সবর বা ধৈর্যধারণ করার পাশাপাশি অবসর সময়ে যেসব কাজ করা যেতে পারে তাহলো

. করোনা থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহ তাআলার দরবারে রোনাজারি করা।

. বেশি বেশি তাওবাহইস্তেগফারের মাধ্যমে নিজেদের পরিচ্ছন্ন করা।

. দ্বীন শেখা।

. কুরআনের বিশুদ্ধ তেলাওয়াত শেখা।

. কুরআনের কিছু কিংবা পূর্ণ কুরআনই হিফজ সম্পন্ন করার চেষ্টা করা।

. নির্ভরযোগ্য তফসির গ্রন্থ পড়ার মাধ্যমে কুরআন অধ্যয়ন করা।

. বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনী পড়া।

. হাদিস অধ্যয়ন করা।

. যারা কুরআনসুন্নাহর জ্ঞান রাখেন; তারা মানুষকে বিশুদ্ধ কুরআন শেখানোর দ্বীন শেখার কাজে সহায়তা করা।

মনে রাখা জরুরি

মহামারি করোনার অবসর একটি বিরাট সুযোগ। এটিকে ইতিবাচক ভাবে মূল্যায়ণ করা যেতে পারে। মহামারির সময়ে যদিকেউ ঘরের বাইরে কিংবা কর্মক্ষেত্রে যেতে না পারে তবে তার জন্য এটি একটি সোনালী সুযোগ।

জীবন যুদ্ধের ব্যস্ততায় যারা দ্বীন, ঈমান, কুরআন শিক্ষা কিংবা কুরআন হেফজ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। কিংবা উন্নত জীবনের জন্য কাজের ব্যস্ততার কারণে যুগোপযোগী কোনো প্রশিক্ষণ গ্রহণের সময় মেলে না, করোনার কারণে লকডাউনের অবসর সময়ে তা সম্পন্ন করার সুযোগ রয়েছে।

মুসলিম ছাত্রশিক্ষক, কর্মজীবি নারীপুরুষের জন্য কুরআন হেফজ একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সদিচ্ছা থাকলে লকডাউনের সময়ে যে কেউ ঘরে বসে কিংবা অনলাইনে কুরআনুল কারিমের যে কোনো একটি অংশ সহজেই হেফজ করতে সক্ষম।

প্রত্যেক মানুষের জন্য এটি এমন এক মহতি কাজ; যে কাজে সব বয়স শ্রেণিপেশার মানুষেরই অংশ গ্রহণের সুযোগ আছে।তবে কুরআন হেফজ করার জন্য শর্ত শুধু এইটুকুই যে, ‘দেখে দেখে বিশুদ্ধ কুরআন তেলাওয়াতে সক্ষম হতে হবে।

আবার যাদের কুরআন তেলাওয়াত বিশুদ্ধ নয়; তাদের জন্য সবচেয়ে বড় সুযোগ হচ্ছে কুরআনুল কারিমের বিশুদ্ধ তেলাওয়াত শেখার চেষ্টা করা।

বিশেষ করে

সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিতদের জন্য বাংলায় অনূদিত কুরআনের তাফসিরতাফসিরে উসমানি, মারেফুল কুরআন, তাওজিহুল কুরআন, নুরুল কুরআন, ইবনে কাসিরসহ অসংখ্য তাফসিরের পাণ্ডুলিপি সংগ্রহ করে পড়ার সুযোগ রয়েছে। এসব তাফসিরের রয়েছে পিডিএফ সংস্করণও।

আবার চাইলে যে কেউ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পরিচালনা করতে পারেনপাঠচক্র কিংবা পাঠক ফোরাম। নির্ধারিত বিষয়েরওপর সবার অংশগ্রহণে দিনের নির্ধারিত এক বা একাধিক সময়ে দ্বীন কুরআন শেখার কাজ করারও রয়েছে সুবর্ণ সুযোগ।

এসব কল্যাণের কাজে যেমন তৈরি হবে গোনাহমুক্ত ব্যক্তি পরিবার সমাজ। তেমনি পরকালের জন্য সংগ্রহ হবে সেরা পাথেয়।যা মানুষকে দুনিয়া পরকালে দেখাবে সফলতার পথ।

আল্লাহ তাআলা বিশ্ববাসীকে করোনাবন্দি সময়কে ভালো কাজে অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন। মহামারি করোনা থেকে বিশ্ববাসীকে হেফাজত করুন। আমিন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com