বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার ওপর ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি হারুনুর রশিদের

0

বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেছেন, দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। অথচ দেখলাম নতুন বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেলে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। এটা কোনো কথা হলো?

রোববার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে চলতি ২০২১-২১ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব বলেছেন বিএনপির এ নেতা। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে উপস্থিত ছিলেন।

সংসদে হারুন বলেন, আমাদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মানসম্মত। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে সেখানে বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। কেন সেখানে করারোপ করা হলো? এই বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। এই কর প্রত্যাহার হওয়া উচিত। সাধারণ বাজেটে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সময় চাই। এই বিষয়গুলো আমরা আলোকপাত করতে চাই।

এছাড়া করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক রাজনীতির শিকার বলেও অভিযোগ তুলে হারুনুর রশীদ বলেন, চীন ও রাশিয়া ভ্যাকসিন দেয়ার প্রস্তাব নিয়ে প্রথমে এসেছিল। তারা ট্র্যায়াল দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আমরা তাদের ট্র্যায়ালের অনুমতি দেইনি। তাদের প্রস্তাব সেই সময় গ্রহণ করলে এখন আমাদের ভ্যাকসিনের সঙ্কট হত না। ভ্যাকসিন নিয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক রাজনীতির শিকার। যে কারণে ভ্যাকসিন নিয়ে চীনের সাথে কথা হলেও তা পাব কি-না অনিশ্চিত। আশা করব এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণে সরকার যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।

বাজেটে ভ্যাকসিনের সুনির্দিষ্ট কোনো গাইড লাইন দেয়া হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ভ্যাকসিন আমাদের দিতে হবে। দেড় বছর হলো আমরা করোনা প্রাদুর্ভাবে পড়েছি। দুই শতাংশ মানুষকেও আমরা এ সময়ে ভ্যাকসিন দিতে পারিনি।

সরকার করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ভারতের ধরণ ছড়িয়েপড়া ঠেকাতে ব্যবস্থা নিতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। গোটা বাংলাদেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশে যেন ভারতের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সেই কামনা করে বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সারা দেশকে অস্থির করে তুলেছে। রাজশাহী বিভাগে করোনা মারাত্মক পরিস্থিতি ধারণ করছে। আম চাষিরাও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা নেই দাবি করে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য চলতি অর্থবছরে যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা জনগণের কাজে লেগেছে বা কোভিড নিয়ন্ত্রণে ব্যয় হয়েছে সরকার তা বলতে পারবে না। কত টাকা কোভিড নিয়ন্ত্রণে ব্যয় হয়েছে সরকারকে তার সঠিক ব্যাখ্যা দিতে হবে। এ সময় তিনি যেসব এলাকায় করোনা বেড়েছে সেখানে অন্তত ১০০ বেডের করোনা ইউনিট স্থাপনের দাবি করেন।

স্বাস্থ্য বিভাগকে সংস্কারের দাবি করে তিনি বলেন, সরকারি চিকিৎসকরা সরকারি হাসপাতালে ডিউটি না করে ব্যক্তিগত ক্লিনিকে দায়িত্ব পালন করছেন।

আসন্ন অর্থবছরের বাজেটের সমালোচনা করে তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রীর বাজেটের শিরোনাম শুনতে ভালো লাগে। কিন্তু বাইরে এর প্রতিক্রিয়া ভালো নয়। নতুন অর্থ বছরের ছয় লাখ ৩ হাজার কোটি টাকার বাজেটে বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ ঋণ নির্ভর। এই ঋণ নির্ভর বাজেট ৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

‘এত ব্যাপক ঋণ নির্ভর বাজেটে অতীতে কোনো সরকারের আমলে হয়নি। চলতি বছরের বাজেট অবাস্তবায়িত রয়েছে। করোনাকালে সরকারে যে বাজেট দেয়া দরকার ছিল সরকার তা দিতে পারেনি। সরকারের নীতি ও ভুল সিদ্ধান্তের কারণে জনদুর্ভোগ ও মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।’

তিনি বলেন, ঈদের সময় মানুষের দুর্ভোগ আমরা দেখেছি। ৫’শ টাকার ভাড়া তিন/চার হাজার টাকা দিতে হয়েছে। ফেরিঘাট থেকে ঢালাওভাবে মানুষ পার হওয়ায় সংক্রমণ বেড়েছে। বেআইনি স্পিড বোর্ডে পার হতে গিয়ে কতগুলো প্রাণ গেল। এর দায় সরকারকে নিতে হবে না?

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com