শহীদ জিয়া দেশে উন্নয়ন-গণতান্ত্রিক রাজনীতির নবধারা প্রবর্তন করেন: শওকত মাহমুদ

0

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ বলেছেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে উন্নয়ন গণতান্ত্রিক রাজনীতির এক নবধারা প্রবর্তন করেছিলেন, যা দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র, আইনের শাসন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এনে দিয়েছিল।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত একআলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। প্রফেশনাল মুভমেন্ট অব বাংলাদেশ সভার আয়োজন করে।এতে সভাপতিত্ব করেন অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া।

শওকত মাহমুদ বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী গভীর রাতে পূর্ব পাকিস্তানের ঘুমন্ত, নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালিরওপর বর্বর হামলা চালিয়ে হত্যা, মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে এক ভীতিকর পরিস্থিতি শুরু করে। এরপর জিয়া দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। যুদ্ধে পরাজিত হলে নির্ঘাত মৃত্যু জেনেও তখন দেশ মাতৃকারমুক্তির জন্য যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন জিয়া। স্ত্রীসন্তানদের জীবন বিপন্ন হতে পারে জানা সত্ত্বেও জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধকে বেগবান করার জন্য নিজ নামে জেড ফোর্স গঠন করেন। ছাড়া মুক্তিযুদ্ধে নম্বর সেক্টরের কমান্ডার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে বিরত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর দেশ পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হলে লাল সবুজের পতাকায় শোভিতস্বাধীন দেশে তিনি পুনরায় সেনাবাহিনীতে ফিরে যান। ১৯৭২ সালে সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন।১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে সংঘটিত ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যা কাণ্ডের পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ক্যু পাল্টা ক্যুরমাধ্যমে দেশ যখন রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা সঙ্কটে নিপতিত তখন জিয়াউর রহমান আবার দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার দৃশ্যপটে আবির্ভূত হন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের নভেম্বর সিপাহী জনতার বিপ্লব সংহতির মধ্য দিয়ে তিনি গৃহবন্দীত্ব থেকে মুক্ত হয়ে জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষর কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। সেনাবাহিনীর মধ্যে প্রশ্নাতীত জনপ্রিয়তা গ্রহণ যোগ্যতা তাকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন করে।

বিএনপির জন্ম ক্যান্টনমেন্টে বলে বিষোদগারের জবাবে তিনি বলেন, ক্যান্টনমেন্ট থেকে যদি স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়া যায়, সেখান থেকে দল করলে অসুবিধা কী? তিনি বলেন, বিএনপি ক্যান্টনমেন্টে নয়, বিএনপির জন্ম সিপাহি জনতার বিপ্লব সংহতির মধ্য দিয়ে।

আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট আইনজীবী সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের(ডিইউজে) সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, শিক্ষক নেতা জাকির হোসেন, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, অধ্যক্ষ আবদুর রহমান অধ্যক্ষ নিজাম উদ্দিন তরফদার প্রমুখ।

শওকত মাহমুদ বলেন, ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি তৎকালীন সরকার সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বাকশাল তথা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে। মাত্র চারটি পত্রিকা রেখে সকল পত্রিকার প্রকাশনা নিষিদ্ধ করে। বাকশাল প্রবর্তনে রুষ্ঠ সাধারণ মানুষ গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনে ব্যাকুল ছিল। রাজনৈতিক দলগুলো সংবিধান সংশোধন করে পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছিলেন। জিয়াউর রহমান জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বাকশাল প্রথা বাতিল করে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেন।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমের ওপর থেকে সকল কালাকানুন প্রত্যাহার করে মুক্ত স্বাধীন গণমাধ্যম চালু করেন। একটি রাজনৈতিক সরকার যেখানে সারাজীবন গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে বাকশাল প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে সংকুচিত করেছিল তখন জাতির প্রয়োজনে সামরিক বাহিনী থেকে আসা একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী সৈনিক স্বাধীনতার অন্যতম মূলস্তম্ভ বহুদলীয় গণতন্ত্র জাতিকে উপহার দিয়ে মুক্ত গণতান্ত্রিক চর্চার পথকে সুগম করেছিলেন। এখানেই জিয়াউর রহমানের সাথে অন্যদের পার্থক্য।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ বলেন, দেশে আজ গণতন্ত্র নেই। দেশ ভর্তি দুর্নীতি সন্ত্রাসে। দেশে পরিবর্তন আনতে হলে আগে আপানারদেরকে একেকজন জিয়ার আর্দশের মানুষ হয়ে গড়ে উঠতে হবে। তবেই মুক্তি আসবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com