নারীর নিরাপত্তায় ভোটারবিহীন সরকার পতনের কোনও বিকল্প নেই: রিজভী

0

দেশে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বর্তমান বাকশালী একদলীয় ভোটারবিহীন সরকারের পতনের কোনও বিকল্প নেই বলেমন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

নারীর নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আজকে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে তনু, মিতু, রাফিদের মতোঅগণিত নারীর আর্তনাদ ভেসে আসছে। খবরের কাগজের পাতা খুলে শুধু নারী নির্যাতনের খবর ছাড়া আপনারা কিছুইদেখবেন না। জাতি হিসেবে আজ আরও সোচ্চার হয়ে রাস্তায় নামতে হবে। কোথাও কারও কোনও নিরাপত্তা নেই। আপনারআমার সন্তানেরও নিরাপত্তা নেই। সন্তানের নিরাপত্তার জন্য সরকারের পতন ছাড়া কোনও বিকল্প নেই।

মঙ্গলবার ( মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের র‌্যালি শুরুর পূর্বে নয়াপল্টনেবিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘আইয়ুব খান উন্নয়নের দশক করেছিল, স্বৈরাচারী শাসকের উন্নয়নের দশক। আর শেখ হাসিনার উন্নয়নেরএকযুগ আমরা দেখলাম। সেই উন্নয়ন হচ্ছে নারী নির্যাতনের উন্নয়ন।

বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, ‘বর্তমান যে সময় সে সময় আমরা সরকারের লোকজনের কাছ থেকে অনেক কথা শুনি।উন্নয়নের চাকচিক্যের কথা শুনি, কিন্তু উন্নয়নের চাকচিক্যের আড়ালে কত নারীর বোবা কণ্ঠ, কখন নারীশিশুর গোঙানির শব্দএই আমলে হয়েছে তার হিসাব নেই। কার কথা বলব! মিতুর কথা বলবো না তনুর কথা বলব, না খাদিজার কথা বলব! এগুলোবলে শেষ করা যাবে না।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আমার কাছে বিস্ময়কর হয়ে উঠেছে সংবাদপত্রের পাতায় খবরটি এসেছে মাননীয়প্রধান বিচারপতি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলার শুনানিতে বলেছেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুরুচিপূর্ণবক্তব্য দেয়া ঠিক নয় আবার বলেছেন, ‘অন্যান্য দেশেও ব্যঙ্গচিত্র হয়, কিন্তু বাংলাদেশের ব্যঙ্গচিত্র অন্যরকম। এতে দেশেরইমেজ ক্ষুণ্ন হয় কিন্তু আমি মাননীয় প্রধান বিচারপতির কাছে একটি প্রশ্ন রাখতে চাই, কোনও নাগরিকের কথা বলা, মুক্তকণ্ঠেআওয়াজ তোলা, চিত্রাঙ্কনে ব্যঙ্গচিত্র তুলে ধরলে যদি তাকে সরকারি হেফাজতে খুন করা হয় তাহলে তাতে কি দেশের ভাবমূর্তিবৃদ্ধি পায়? এটাতো জনগণ জানতে চাইতেই পারে। আপনি প্রধান বিচারপতি, আপনি যে অভিমতগুলো দিয়েছেন এটা অবশ্যইশিরোধার্য। কিন্তু এই যে বলেছেন, ব্যঙ্গচিত্র করলে দেশের ইমেজ ক্ষুণ্ন হয়, তাহলে কার্টুন আঁকার জন্য সরকারি হেফাজতে, পুলিশ হেফাজতে যদি তাদের হত্যা করা হয় তাতে কি দেশের ইমেজ বাড়ে?’

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) . বেনজীর আহমেদের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘পুলিশের হাতে যেঅস্ত্র দেয়া হয় সেটা কি লাঠি? সেটা প্রয়োজনে ব্যবহার করবে। পুলিশের আইজি সাহেব যখন র‌্যাবের ডিজি ছিলেন তখনওআন্দোলনের সময় বলেছেন– “আপনারা কি গুলি পকেটে রাখবেন? গুলি কি আপনাদের পকেটে রাখার জন্য দেয়া হয়েছে?” দেশের বিরোধী কণ্ঠগুলো প্রত্যেকে কি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি? এখানে আমরা যারা আছি সবাই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি? আপনিপুলিশের প্রধান হয়ে কী করে আপনার বাহিনীর সদস্যদের কথা বলতে পারেন?’

রিজভী বলেন, ‘আজকে আমরা যেটা দেখি সেটা হলো বাকশালের নমুনা। বাংলাদেশ নাকি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে।পুলিশ উৎসব করবে। এগুলো বাকশালের নমুনা। পুলিশ উৎসব করবে কেন? পুলিশতো একটি রাষ্ট্রের নিরেপেক্ষ প্রতিষ্ঠান।আমরা কয়েকদিন পর দেখবো যশোরের এসপি আবারও আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক। ফেনীর এসপি তিনি আবারআওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণ সম্পাদক। অর্থাৎ রাষ্ট্র, দল, প্রশাসন সব একাকার। স্বৈরাচারী দেশগুলোতে এমন চিত্র দেখাযায়।

মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদের সঞ্চালনায় সময়বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল সালাম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, মহিলাদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, মহিলা দলের নেত্রী নূরে আরা সাফা, নিলুফার চৌধুরি মনি আরিফা সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com