সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চক্রান্ত বরদাশ্ত করা হবে না: আল্লামা কাসেমী

0

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর মহাসচিব আল্লামা নূর হোছাইন কাসেমী বলেছেন, আবহমানকাল থেকে বাংলাদেশে হিন্দু,মুসলমান ও অন্যান্য ধর্মবলাম্বীদের সম্প্রীতিপূর্ন সহ অবস্থানের উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আসছে। এ দেশে কোনো সাম্প্রদায়িক বৈষম্য নেই। যদি থাকত তাহলে প্রশাসন থেকে শুরু করে সরকারি সব স্তরের চাকরিতে ৩০ শতাংশ পদে নিয়োগের সুযোগ সংখ্যালঘুরা পেতেন না। তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের সাথে সমান সুযোগ পেয়ে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন। যদি কোটা থাকত, তাহলে তারা এত সুযোগ পেতেন না। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। শুধু সরকারি বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রেই নয়, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালনে সমান অধিকার ভোগ করে আসছেন তারা। আবার ব্যবসায় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে তারা স্বাধীনভাবে ব্যবসায় করছেন। বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়, তথা মুসলমানেরা যদি বিজেপির উগ্র হিন্দুদের মতো হতেন, তাহলে এত সুযোগ-সুবিধা দেয়া তাদের ক্ষেত্রে দুষ্কর হয়ে পড়ত। কাজেই উদার সাম্প্রদায়িকতার দেশ হিসাবে বাংলাদেশ বর্তমান বিশ্বে অন্যতম।

সোমবার (২৩ নভেম্বর) সকালে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ আয়োজিত জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে “সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় আমাদের করণীয়” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান আলোচকের আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

আল্লামা কাসেমী বলেন, বাংলাদেশের এ সম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বিনষ্ট করতে একটি চিন্হিত মহল গভীর ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে, তারা মুসলমানদেরকে ছুড় ছুড়ি দেওয়ার জন্য মাঝে মধ্যে ইসলাম, মুসলমান ও হেফাজতে ইসলাম নিয়ে ব্যঙ্গ করে।

অপর দিকে সংখ্যালগুদের বসতবাড়ী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে সম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির পায়তারা করে। এ মহলটির ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে, সম্প্রীতি বিনষ্টের সকল চক্রান্ত সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করতে হবে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর সহসভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঞ্জরুল ইসলাম আফেন্দীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন, নাগরিক ঐক্যের আহবাযক মাহমুদুর রহমান মান্না, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর সহসভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড,আহমেদ আহমদ আব্দুল কাদের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুকমল বড়ুয়া, মুসলিম লীগের মহাসচিব এডভোকেট কাজী আবুল খয়ের, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়বে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা মোস্তফা তারিকুল হাসান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মুফতি মুনির হোছাইন কাসেমী, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী,সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নাজমুল হাসান, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা এখলাছুর রহমান রিয়াদ প্রমুখ।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সব সময়ই ক্ষমতায় ঠিকে থাকার জন্য কায়েমী সরকার ধর্মকে ব্যবহার করে থাকে, সম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগিয়ে ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে চায়।

বাংলাদেশ সম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ সাম্প্রতিক সময়ে সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে যে পায়তারা শুরু হয়েছে, তাতে সরকারের পরোক্ষ মদদ রয়েছে। সরকার সংখ্যালগুদের অধিকার সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে।

সুকমল বড়ুয়া বলেন, ধর্ম যারা বিশ্বাস করে তারা সম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করতে পারে না। বিভিন্ন ধর্ম ধর্মগ্রন্থ নিয়ে বাড়াবাড়ি মোটেই কাম্য নয়। সকল ধর্মাবলম্বীদের স্ব স্ব ধর্ম মেনে চললে সংঘাত আসতেই পারে না।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, যেখানে সম্প্রদাযিক দাঙ্গা সৃষ্টির পায়তারা হবে, সেখানেই তা প্রতিহত করতে হবে, দেশ-জাতি রক্ষায় সম্প্রদাযিকতার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। কোথাও যাতে কোন অসুভ শক্তি আমার শতবছরের সম্প্রীতিকে নষ্ট করতে না পারে সে ব্যাপারে সর্বদায় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com