যেসব অবিশ্বাসে মানুষের ঈমান থাকে না

0

বিশ্বাস দুনিয়ার সেরা দামি জিনিস। বিশ্বাসের ওপর ভর করেই মানুষ বেঁচে থাকে। সব ধর্ম-বর্ণ-জাতিগোষ্ঠীর মানুষের কাছে বিশ্বাসের গুরুত্ব অনেক বেশি। কিন্তু মুমিন মুসলমানের কাছে ইসলামের প্রতি বিশ্বাস অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

কেননা ইসলামের সব বিধানের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেই মানুষ ঈমানদার মুসলিম হয়। এর ওপর ভিত্তি করেই পরকালের ভালো-মন্দের চূড়ান্ত ফয়সালা নির্ধারিত হবে।

মানুষ ইচ্ছা-অনিচ্ছায় কিংবা ঝগড়া-বিবাদে যদি অন্যায়ভাবে কাউকে একটি গালি দেয় কিংবা সে যা নয়, ওই নামে সম্বোধন করে ডাকে; এসব কারণে মানুষ গোনাহের সম্মুখীন হয়। তা মানুষের বিশ্বাসের মারাত্মক পরিপন্থী কাজ।

কোনো ব্যক্তিকে এমন কোনো বিষয়ে সম্বোধন করা ঠিক নয়; যে কাজের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নেই। যদি তা করা হয় তবে তা অনেক সময় কুফরে পরিণত হয়। কেননা কোনো কিছুকে গোপন করাই হচ্ছে কুফর বা অবিশ্বাস।

তাছাড়া প্রাপ্যক্ষেত্রে শুকরিয়া না করলে কিংবা অকৃতজ্ঞ হওয়া কুফরের অন্তর্ভুক্ত। এ কারণেই ইসলামের বিশ্বাস মর্যাদা শুধু বেশিই নয়, বরং মুক্তির একমাত্র পথও বটে।

ইসলামি শরিয়তে ঈমান বা বিশ্বাস সম্পর্কে বক্তব্য হলো- ‘আল্লাহ তাআলা মানুষের প্রতি ওহির মাধ্যমে যেসব বিধি-নিষেধ দিয়েছেন তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন ও মেনে নেয়ার নামই ঈমান। এ সব বিষয়ের ওপর বিশ্বাসস্থাপন করা ফরজ। এ বিধানের বাইরে কোনো একটি অস্বীকার করাই কুফর বা অবিশ্বাস। যে ব্যক্তি আল্লাহর বিধানের অবাধ্য হয়ে তাকে মিথ্যা বলে জানবে, শরিয়তের আলোকে ওই ব্যক্তিই কাফের বা অবিশ্বাসী।

ইসলামিক স্কলাররা এমন পাঁচটি বিষয়ের ব্যাপারে একমত। যে পাঁচটি বিষয়ে বিশ্বাসস্থাপন না করলে যে কেউ কাফের বা কুফরির সঙ্গে জড়িত। তাহলো-

– আল্লাহ প্রেরিত নবি-রাসুলদের মিথ্যা সাব্যস্ত করা কুফরি।

– আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের দেয়া হুকুম-আহকাম অহংকার করে অমান্য করার পাশাপাশি তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানো।

– নবি-রাসুলদের ব্যাপারে সত্য-মিথ্যা সাক্ষ্য না দিয়ে তাদের উপক্ষো করা এবং তাদের ব্যাপারে অমনোযোগী হওয়াও কুফর।

– আল্লাহ তাআলা প্রেরিত নবি-রাসুলদের ব্যাপারে সন্দেহ, সংশয় পোষণ করাও কুফরি।

– মুখে ঈমানের কথা বলে অন্তরে বা গোপনে তা অস্বীকার করাও কুফরি। 

এ ছাড়া আরও কিছু কাজ ও বিশ্বাস আছে, যা মানুষকে ঈমানহারা করে দেয়। তাহলো-

– আল্লাহর সঙ্গে অন্য কাউকে শরিক করা।

– বিচার ফয়সালায় আল্লাহর বিধান ও মানুষের মাঝে সমঝোতাকারী হিসেবে কাউকে সাব্যস্ত করা।

– আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা ব্যক্তিকে কাফের বা অবিশ্বাসী মনে না করে সঠিক পথের অনুসারী মনে করাও কুফরি।

– সমস্যা সমাধানে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সিদ্ধান্ত ও দিকনির্দেশনার বিপরীতে অন্য কোনো ব্যক্তির সিদ্ধান্ত ও দিকনির্দেশনাকে উত্তম বলে মনে করাও কুফরি।

– রাসুলু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যে কোনো দিকনির্দেশনাকে ঘৃণা বা অপছন্দ করাও কুফরি।

– কুরআনের আয়াত বা বিধান নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রোপ কিংবা উপহাস করাও কুফরি।

– যে কোনো যাদু-টোনা করা কুফরি। এ কারণে মানুষের শান্তি ও সুসম্পর্ক নষ্ট হয়।

– ঈমান ও ইসলাম সম্পর্কিত যে কোনো বিষয়ে মুসলমানদের বিপক্ষে মুশরিকদের সহায়তা করাও কুফরি।

– আল্লাহ তাআলা প্রদত্ত কুরআনুল কারিমের বিধানকে অস্বীকার করা বা পিঠ দেখানোও কুফরি।

বিশেষ করে

এমন বিশ্বাস রাখা যে, কিছু কিছু ব্যক্তির জন্য আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলের দেয়া জীবন বিধানের বিপরীতে কিছু কিছু বিষয়ে নিজস্ব মতামত বা ইখতিয়ার পোষণ করা। তাও মারাত্মক কুফরি।

সুতরাং মানুষের বিশ্বাস হতে হবে সুস্পষ্ট ও নির্মল। যে বিশ্বাসে থাকবে কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোনো কাজ। যা মানুষকে ঈমানহারা করে দেয়।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইসলামের সব বিধানের ওপর যথাযথ বিশ্বাস স্থাপন করার তাওফিক দান করুন। ঈমানের মতো মহামূল্যবান সম্পদ নিরাপদ রাখতে ইসলামের বিধানের প্রতি যথাযথ বিশ্বাস স্থাপন করার তাওফিক দান করুন। কুফর ও শিরক থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com