ভারত সীমান্তের কাছে নতুন ‘সুরঙ্গ’ তৈরি করছে চীন

0

দোকলাম উপত্যকায় সব মওসুমে যাতায়াতের উপযুক্ত সড়ক নির্মাণের কাজ জোরদার করেছে চীন। স্যাটেলাইট চিত্রে চীনের এই কার্যক্রম ধরা পড়েছে। এই অঞ্চলে ২০১৭ সালে ভারত ও চীনা সেনাদের মধ্যে প্রায় ৭০ দিন অচলাবস্থা বিরাজ করে।

২০১৯ সালের আগস্টে তোলা স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যায়, সড়কের উপর ‘সুরঙ্গে’র মতো আচ্ছাদন নির্মাণ করা হয়েছে। উত্তর দিক থেকে এই অঞ্চলে প্রবেশের পথ – অনেক উঁচুতে অবস্থিত মেরুগ লা পাসের একটি অংশে এই আচ্ছাদন নির্মাণ করা হয়।

অক্টোবরে একই এলাকার আরেক ছবিতে দেখা যায় যে, চীনের নির্মাণ শ্রমিকরা এই সুরঙ্গপথটির দৈর্ঘ্য ৫০০ মিটার বা অর্থ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত করেছে।

ছবিগুলোর ব্যাপারে সেনা বিশেষজ্ঞরা এনডিটিভিকে বলেন, লক্ষ্য সুষ্পষ্ট। শীতকালেও যাতে দোকলাম উপত্যকায় যাতায়াত নিশ্চিত করা যায় তার ব্যবস্থা করা। শীতকালে এই উপত্যকা পুরোপুরি বরফে ঢেকে যায়। ফলে যাতায়াত দু:সাধ্য হয়ে ওঠে।

দোকলাম উপত্যকাকে নিজের বলে দাবি করে চীন ও ভুটান। ২০১৭ সালের জুনে ভারতীয় সেনারা ভুটানের পক্ষে ওই এলাকায় চীনাদের সড়ক নির্মাণকাজ বন্ধ করতে গেলে অচলাবস্থা তৈরি হয়। এলাকাটি ভারতের ‘চিকেন নেক’ নামে পরিচিত শিলিগুড়ি করিডোরের কাছাকাছি হওয়ায় তা নয়াদিল্লীর জন্য নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি করেছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্য এই করিডোর দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত।

দোকলামে চীনের এই সুরঙ্গপথ নির্মাণের খবর এমন এক সময় প্রকাশ পেল যখন পূর্ব লাদাখে ভারতের সঙ্গে দেশটির সীমান্ত বিরোধ চলছে। লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) নামে পরিচিত ভারত ও চীনের মধ্যে দীর্ঘ সীমান্তের অনেক জায়গায় চীনা সেনারা লাইন অতিক্রম করে ভারতে ঢুকে পড়েছে বলে নয়াদিল্লী দাবি করে।

পূর্ব লাদাখে দুই দেশের সেনারা এখন মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। সামরিক কমান্ডার পর্যায়ে আট দফা আলোচনার পরও সেনা সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে কোন সমঝোতায় পৌছানো যায়নি। ফলে মনে হচ্ছে নজিরবিহীন এই সামরিক অচলাবস্থা চলতি শীতকালেও বজায় থাকবে।

এখন এটা স্পষ্ট যে ভারতের সিকিম রাজ্য ও ভুটানের মধ্যে অবস্থিত দোকলাম উপত্যকায় সড়ক নেটওয়ার্ক বিস্তারের চেষ্টা করছে চীন।

২০১৭ সালের অচলাবস্থার সময় যেটি সব মওসুমে চলাচলের উপযুক্ত একটি মেঠোপথ ছিলো সেটি এখন রীতিমত পিচঢালা রাজপথ। কাছাকাছি এলাকায় ভারতও সড়ক নির্মাণ তৎপরতা বাড়িয়েছে। চীনা সেনাদের অভিযানের মুখে দ্রুত সেনাসমাবেশ ঘটাতে পারাই ভারতের লক্ষ্য।

গত তিন বছরে ভারত সীমান্তের কাছে চীন তার বিমান ঘাঁটি, বিমান প্রতিরক্ষা অবস্থান ও হেলিপ্যাড সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ করেছে।

স্টার্টফর-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব নির্মাণ শেষ হলে চীনা সেনাদের বিপুল বিক্রমে অভিযান চালানোর ক্ষমতা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।

সূত্র: এনডিটিভি

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com