নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি। অভিযানে মাত্র ১৮ ঘণ্টায় তিন শতাধিক অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৬ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পর থেকেই অবৈধ অভিবাসীরা নানা ধরনের সমস্যায় পড়ে। যদিও তিনি নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন ইমিগ্রেশনসহ অন্যান্য ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে। তিনি নির্বাচনে জয়লাভ করার পর হোমল্যান্ড সিকিউরিটিতে জনবল বাড়ান এবং সীমান্তে বর্ডার নির্মাণ করেন।

সেই সঙ্গে অভিবাসনবিরোধী বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করেন। ট্রাম্পের ইমিগ্রেশনবিরোধী আইনের বিরোধিতা করেও কোনো লাভ হয়নি। বিশেষ করে ডেমোক্র্যাট অধ্যুষিত স্টেটের মেয়ররা ইমিগ্রেশনের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের বিপরীতে অবস্থান নেন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। প্রতিনিয়তই হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে তাদের বাসায় এবং কর্মস্থলে হানা দেয়।

অন্যদিকে সীমান্ত এলাকায় জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করা হয়েছে। যাতে করে কেউ অবৈধ পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে না পারে। আগে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ইমিগ্রেশন জজের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ ছিল, এখন তাও নেই। ইমিগ্রেশন জজ যে রায় দেবেন তাই গ্রহণ করতে হবে।

সম্প্রতি যারা সর্বস্ব হারিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করছেন তাদের সীমান্ত এলাকার ডিপোর্টেশন সেন্টারে রাখা হচ্ছে এবং অল্পদিনের মধ্যেই বিশেষ ফ্লাইটে নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।

সম্প্রতি হোমল্যান্ড সিকিউরিটি প্রায় ৩০০ অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতার করেছে। খোদ নিউইয়র্কেই গ্রেফতার করা হয় প্রায় ৫০ জনকে। এছাড়াও বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও অবৈধ ছাত্রছাত্রীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।

অবৈধদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু হয় গত ১৩ অক্টোবর বিকেলে। এদিন টেক্সাস থেকে ১২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে অধিকাংশ এসেছে মেক্সিকো, গুয়াতেমালা, এলসালভাদর এবং হন্ডুরাস থেকে। পুনরায় অভিযানে ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা সবাই মেক্সিকো থেকে আমেরিকায় আসেন।

জানা গেছে, তারা যে অ্যাপার্টমেন্টে ছিলেন সেখানে একজন আমেরিকান নাগরিকও ছিলেন। তাদের সঙ্গে তাকেও গ্রেফতার করা হয়। সীমান্ত পথে ফ্রিজিং ট্রাকে করে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পথে গ্রেফতার করা হয় ৮৪ জন অবৈধ অভিবাসীকে। তারা মেক্সিকো, গুয়াতেমালা, হন্ডুরাস এবং গুয়াতেমালার নাগরিক।

১৪ অক্টোবর সকালে আরেক অভিযানে ৭৪ জন অবৈধ অভিবাসীকে সীমান্তে গ্রেফতার করা হয়। তাদের অধিকাংশই মেক্সিকো, এল সালভাদর, হন্ডুরাস, গুয়াতেমালা এবং পেরু থেকে আসছিলেন। গ্রেফতারের পর তাদের সবাইকে সীমান্তবর্তী ডিপোর্টেশন সেন্টারগুলোতে রাখা হয়েছে।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে তারা ১ লাখ ৪৩ হাজার অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করেছে এবং ২ লাখ ৭৬ হাজারকে ডিপোর্ট করা হয়েছে। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ২০১৮ সাল থেকে ২০১৯ সালে ১০ শতাংশ কম গ্রেফতার করা হয়েছে। ২০১৯ সালে গ্রেফতারের হার ৬৮ শতাংশ এবং ক্রিমিনাল গ্রেফতারের হার ৮৬ শতাংশ।