১১ মাসে বিউবোর ভর্তুকি ৬৫০০ কোটি টাকা

0

উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কিনে তা কম মূল্য বিক্রি করার কারণে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) লোকসান ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে। আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য বিউবোকে জুলাই-মে মাস পর্যন্ত ১১ মাসে ভর্তুকিবাবদ ছয় হাজার ৫০০ কোটি প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে শেষ তিন মাস মার্চ-এপ্রিল-মে-তে বিউবোর লোকসান হয়েছে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির কারণে লোকসান গুনতে হয়েছে ১১১ কোটি টাকা।

বিউবোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চলতি বছরের তিন মাসে (মার্চ, এপ্রিল ও মে) পিডিবির আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় এক হাজার ৯০০ কোটি টাকা। মূলত তিন খাত থেকে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কেনার কারণে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) এই লোকসান হয়েছে। এই তিন খাত হচ্ছে আইপিপি (ইন্ডিডেন্ডেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট), ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এবং ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির কারণে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আইপিপি খাত থেকে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কেনায়। এ জন্য তিন মাসে পিডিবির লোকসান গুনতে হয়েছে- এক হাজার ৩৭৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। একই সময়ে কুইক রেন্টাল থেকে বিদ্যুৎ কিনে লোকসান হয়েছে ৪১৪ কোটি টাকা। অন্য দিকে, তিন মাসে ভারত থেকে বিদ্যুৎ কেনায় লোকসান হয়েছে আরো ১১১ কোটি ১৮ লাখ টাকা। ফলে তিন মাসে লোকসান হয়েছে এক হাজার ৮৬০ কোটি চার লাখ টাকা।

এই অবস্থায় পিডিবির পক্ষ থেকে দ্রুত এই পরিমাণ অর্থ ছাড় করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করা হয়। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি এক হাজার ১৪৩ কোটি ছয় লাখ টাকা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ছাড় করা হয়েছে বলে জানা গেছে । এর আগে গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত আট মাসে পিডিবির লোকসানের বিপরীতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পাঁচ হাজার ৩৫৫ লাখ টাকা ভর্তুকি বাবদ প্রদান করা হয় বলে অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

বিউবো সূত্রে জানা গেছে, তিন মাসে বিদ্যুতের যে লোকসান হয়েছে, তাতে মাসওয়ারি লোকসানের একটি খতিয়ান দেয়া হয়েছে। এতে দেখা যায়, মার্চ মাসে আইপিপি থেকে বিদ্যুৎ কেনায় লোকসান হয়েছে ৪৫৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা, ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনায় লোকসান ১৫২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করে ক্ষতি হয়েছে ৪৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। একইভাবে এপ্রিল মাসে লোকসানের পরিমাণ এই তিন খাত থেকে যথাক্রমে ৪২৩ কোটি ৮৮ লাখ, ১৩৫ কোটি ৬৮ লাখ এবং ৩১ কোটি ৪২ লাখ টাকা এবং মে মাসে লোকসান হয়েছে যথাক্রমে ৫০১ কোটি ৪৩ লাখ, ১২৫ কোটি ৩২ লাখ এবং ৩১ কোটি ৪২ লাখ টাকা।

বিউবোর পক্ষ থেকে এই বিষয়ে বলা হয়, ‘আইপিপি এবং ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসহ ভারত থেকে ক্রয়কৃত বিদ্যুতের দাবিকৃত বিল নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ করার বিষয়ে বাধ্যবাধকতা থাকায় সরকারের আর্থিক সহায়তা পাবে বলে প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবিকৃত বিল যথাসময়ে পরিশোধ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে। ’

বিদ্যুতের ব্যয় বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিউবোর ব্যাখ্যা হচ্ছে, বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় মূলত নির্ভর করে ব্যবহৃত জ্বালানি ব্যবহার, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, টাকার অবমূল্যায়ন, স্থাপিত ক্ষমতা অনুযায়ী বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি না পাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে লোকসানও বাড়ছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com