যে কাজে মানুষের সব প্রয়োজন মেটাবেন আল্লাহ

0

মানুষ সামাজিক জীব। সমাজ জীবনে একে অপরের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে ইসলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একে বিপদে অন্যকে এগিয়ে আসার প্রতি তাগিদ দিয়েছেন। একে অপরের বিপদ-আপদ কিংবা প্রয়োজনে এগিয়ে আসার পুরস্কারও ঘোষণা করেছেন। কোনো মুসলমান ভাই কিংবা বোনকে সাহায্য করায় দুনিয়া ও পরকালের উপকারিতা সম্পর্কিত ৪টি হাদিস তুলে ধরা হলো-

– হজরত সালিম রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। কাজেই সে তার উপর নির্যাতন করবে না এবং তাকে অসহায় অবস্থায়ও ছেড়ে যাবে না। যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ করবে, আল্লাহ তার প্রয়োজন পূরণ করবেন। একইভাবে যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের বিপদ দূর করবে, আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিনে তার বিপদ দূর করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ গোপন রাখবে, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তার দোষ গোপন রাখবেন।’ (আবু দাউদ, বুখারি, মুসলিম)

– হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে লোক কোনো মুসলমান লোকের দুনিয়ার বিপদ-আপদের মধ্য থেকে একটি বিপদও দূর করে দেয়, আল্লাহ তাআলা তার পরকালের বিপদাপদের কোনো একটি বিপদ দূর করে দেবেন। যে লোক দুনিয়াতে অন্য কারো অভাব দূর করে দেয়, তার দুনিয়া ও আখেরাতের অসুবিধাগুলোকে আল্লাহ তাআলা সহজ করে দেবেন। যে লোক দুনিয়ায় কোনো মুসলমানের দোষ-ক্রটিকে গোপন রাখবে, আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখেরাতে তার দোষ-ক্রটি গোপন রাখবেন। যে পর্যন্ত বান্দাহ তার ভাইয়ের সাহায্য-সহযোগিতায় নিয়োজিত থাকে, সে পর্যন্ত আল্লাহ তাআলাও তাঁর সাহায্য-সহযোগিতায় নিয়োজিত থাকেন।’ (তিরমিজি, মসলিম)

– হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘বিধবা ও মিসকিনের জন্য খাদ্য জোগাড় করতে চেষ্টারত ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদের মত অথবা রাতে নামাজে অতিবাহিত ও দিনে রোজা পালনকারীর মতো।’ (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)

সুতরাং মানুষের বিপদ-আপদে এগিয়ে আসা প্রতিটি মানুষের ঈমানি দায়িত্ব। কেননা মানুষের মধ্যে আল্লাহর কাছে ওই ব্যক্তি উত্তম, যে অন্যের উপকারে এগিয়ে আসে। হাদিসে পাকের যে ঘোষণা মানুষকে অন্যের উপকারের দিকে বেশি ধাবিত করে তাহলো-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মানুষের মধ্যে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় হচ্ছে তারা, যারা মানুষের জন্যে সবচেয়ে বেশি উপকারী। আর আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় আমল হচ্ছে-
– একজন মুসলমানকে খুশি করা অথবা
– তার কোনো একটা দুঃখ দূর করা অথবা
– তার ঋণ মাফ করে দেয়া অথবা
– ক্ষুধার্ত অবস্থায় তাকে খাদ্য দেয়া।
তিনি আরও বলেন, মদিনার এই মসজিদে (মসজিদে নববিতে) এক মাস ইতেকাফ করার চেয়ে কোনো একজন মুসলমান ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ করার জন্যে তার সঙ্গে হাঁটা আমার কাছে বেশি প্রিয়। আর যে ব্যক্তি নিজের রাগ দমন করে আল্লাহ তার দোষত্রুটি গোপন রাখবেন।’

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, হাদিসের অনুসরণ ও অনুকরণে মানুষের বিপদ-আপদে সাহযোগিতা করা। সাধ্যমতো উপকার করা। কুরআনের এ নির্দেশ অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘মুমিন পুরুষ আর মুমিন নারী পরস্পর পরস্পরের বন্ধু, তারা সৎকাজের নির্দেশ দেয়, অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে। নামাজ প্রতিষ্ঠা করে, জাকাত দেয়। আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে। তাদের প্রতিই আল্লাহ করুণা প্রদর্শন করবেন। আল্লাহ তো প্রবল পরাক্রান্ত, মহা প্রজ্ঞাবান।’ (সুরা তাওবাহ : আয়াত ৭১)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মুসলিম উম্মাহর সব নারী-পুরুষসহ সব মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার তাওফিক দান করুন। হাদিসের উপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com