আরেকটি মহামারির জন্য বিশ্ব প্রস্তুত তো?

0

মহামারি করোনায় স্তব্ধ গোটা বিশ্ব। এর প্রভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি ও পর্যটনসহ সবকিছুতেই বিপর্যয় নেমে এসেছে। পুরো বিশ্বই এখন প্রাণঘাতী এই মহামারির সঙ্গে লড়ছে। প্রস্তুতিহীন অবস্থায় করোনা আঘাত হানায় বিশ্বকে ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। 

এত কিছুর পরও ভবিষ্যতের মহামারি নিয়ে আমরা খুব সামান্যই প্রস্তুতি নিচ্ছি। যার কারণে ভবিষ্যতের যেকোনো মহামারি আরও বেশি ধ্বংসাত্মক হয়ে আসতে পারে। সোমবার বিষয়টি নিয়ে একটি বিশ্ব স্বাস্থ্য মনিটরিং সংস্থা আগাম সতর্ক করেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও বিশ্বব্যাংকের তৈরি করা একটি স্বতন্ত্র সংস্থা গ্লোবাল প্রিপেয়ার্ডনেস মনিটরিং বোর্ড (জিপিএমবি) নতুন একটি প্রতিবেদনে সমালোচনা করে জানিয়েছে, করোনা প্রকাশ করে দিয়েছে যে এ ধরনের বিপর্যয়ে প্রস্তুতি নেয়ার জন্য বিশ্ব কতটা কম মনোনিবেশ এবং বিনিয়োগ করেছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কভিড-১৯ বিশ্বের প্রস্তুতির একটি কঠোর পরীক্ষা নিয়েছে। গত বছর কভিড-১৯ আঘাত হানার আগে প্রাথমিক প্রতিবেদনে সতর্ক করে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল, কিন্তু সেটাতে সামান্যই মনোযোগ দেয়া হয়েছিল। 

প্রতিবেদনটিতে সতর্ক করা হয়েছে যে কভিড-১৯-এর অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে ব্যর্থ হলে বা প্রয়োজনীয় সংস্থান ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেগুলোর বিষয়ে কাজ না করার অর্থ হলো পরবর্তী মহামারিটি আরও বেশি ধ্বংসাত্মক হবে।

জিপিএমবির সহ-সভাপতি, নরওয়ের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ডব্লিউএইচওর সাবেক প্রধান গ্রো হারলেম ব্রান্টল্যান্ড সোমবার প্রতিবেদনটি প্রকাশের সময় বলেন, এক বছর আগে আমরা যখন সতর্ক করেছিলাম, তখন বিশ্ব সামান্যই প্রস্তুতি নিয়েছিল। 

তিনি বলেন, কভিড-১৯-এর প্রভাব আমাদের আশঙ্কার চেয়েও খারাপ, তবে গত বছর আমরা যে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলাম তা এখনো গৃহীত হয়নি। সময় এসেছে এখনই এ ‘আতঙ্ক ও অবহেলার চক্র’ ভেঙে ফেলার।

বৈশ্বিক প্রস্তুতি নিরীক্ষণ বোর্ড (জিপিএমবি) আবারও বিশ্বজুড়ে সহযোগিতা এবং মহামারির প্রস্তুতি ও প্রতিরোধের জন্য দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটি জাতিসংঘ, ডব্লিউএইচও ও বিশ্বব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলোর প্রতি জরুরি প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়ার জন্য আন্তর্জাতিক কাঠামোয় মতৈক্যের লক্ষ্যে একটি শীর্ষ সম্মেলনের আহ্বান জানিয়েছে।

ব্রান্টল্যান্ড বলেছেন, প্রয়োজনীয় স্কেলটিতে টেকসই ও ভবিষ্যৎ অর্থায়ন নিশ্চিত করতে অন্যান্য কাঠামোর মধ্যে একটি মেকানিজম অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। মহামারী প্রস্তুতির ক্ষেত্রে বিনিয়োগের প্রতিদান অপরিসীম। প্রতিরোধ ও প্রস্তুতির ব্যয়ের অনুমান বিলিয়ন ডলারে পরিমাপ করা হয়, অন্যদিকে একটি মহামারির ব্যয় ট্রিলিয়ন ডলারে পরিমাপ করা হয়।

ডব্লিউএইচওর বর্তমান প্রধান ড. টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসুস ভার্চুয়াল ইভেন্টটিতে বলেছিলেন, স্বাস্থ্য ও প্রস্তুতিতে ব্যয় করা দান নয়; এটা আমাদের ভবিষ্যতের বিনিয়োগ। প্রস্তুতিতে বিনিয়োগ না করার বিষয়টি বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করে তারপর সুরক্ষা বৃদ্ধির আহ্বান কিংবা শহর পুড়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে তারপর ফায়ার বিভাগের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করার মতো। 

তিনি আরও বলেন, কভিড-১৯ শেষ মহামারি বা সর্বশেষ স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা না। বিশ্বব্যাপী পরবর্তী স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা কী হবে, তা আমরা জানি না। তবে আমরা জানি যে এটা আবার আসবে এবং আমাদের অবশ্যই প্রস্তুত থাকতে হবে। সায়েন্স অ্যালার্ট অবলম্বনে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com