আমেরিকা ও ইউরোপ সন্ত্রাসীদের আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে: রাইসি

0

জাতিগুলোর কাছে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শাসন ব্যবস্থা বিশ্বের সবচেয়ে ঘৃণিত ব্যবস্থা হিসেবে পরিচিত।

এ ব্যাপারে ইরানের বিচারবিভাগের প্রধান সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রাইসি ইসলামি ইরানের পতন ঘটানোর জন্য মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, মার্কিন কর্মকর্তারা বহু বছর ধরে সারা বিশ্বে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অন্যায় অবিচারের মূল হোতা। এখন তারা নিজ দেশেই সরকার বিরোধী বিক্ষোভ, সহিংসতা ও অচলাবস্থার সম্মুখীন হলেও বিশ্বের স্বাধীন জাতিগুলোর বিরুদ্ধে তাদের বিদ্বেষী আচরণ অব্যাহত রয়েছে।

ইরানের বিচারবিভাগের প্রধান রাইসি আমেরিকা-ভিত্তিক ইরানবিরোধী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ‘তোন্দার’-এর প্রধানকে আটকে নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘মানবাধিকারের দাবিদার দেশগুলো সন্ত্রাসীদের জন্য অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিরপরাধ মানুষ হত্যার জন্য আমেরিকার পাশাপাশি ইউরোপীয় দেশগুলোও সন্ত্রাসীদের আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ডের প্রতি সমর্থন দিচ্ছে।’

প্রকৃতপক্ষে, বছরের পর বছর ধরে আফগানিস্তান, ইরাক ও ইয়েমেনে চলমান যুদ্ধ, সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদের বিস্তার এবং ফিলিস্তিন ও ইয়েমেনে মার্কিন সমর্থনপুষ্ট কয়েকটি আরব সরকারের আগ্রাসন এসবই জাতিগুলোর বিরুদ্ধে মার্কিন বর্বরতার প্রমাণ।  এ থেকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শাসন ব্যবস্থার নির্মমতার বিষয়টি ফুটে ওঠে। গত কয়েক শতাব্দিতে অধিকৃত ফিলিস্তিনে সবচেয়ে বড় জুলুম নির্যাতন ও বর্বরতার ঘটনা ঘটেছে। মার্কিন সমর্থনপুষ্ট দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইল শুধু ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখল করেই ক্ষান্ত হয়নি তারা ওই জাতির ইতিহাস ঐতিহ্যও চিরতরে মুছে ফেলার চেষ্টা করছে।

পাশ্চাত্যের দেশগুলো বিশ্বের অন্যত্র মানবাধিকারের ব্যাপারেও দ্বিমুখী আচরণ করছে। এমনকি ওই দেশগুলোর জনগণও বর্ণবৈষম্য, দুর্নীতি ও অবিচারের সম্মুখীন। এ কারণে সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিবাদ ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে আমেরিকার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে চলমান সরকার বিরোধী বিক্ষোভ ও সহিংসতার কথা উল্লেখ করা যায়। কৃষ্ণাঙ্গদের পাশাপাশি স্বেতাঙ্গরাও ওই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক দমনপীড়ন সত্বেও বিক্ষোভ এখনো অব্যাহত রয়েছে।

মার্কিন সরকারের মানবতা বিরোধী কর্মকাণ্ডের নানা দিক তুলে ধরে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী তার হজবাণীতে বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সড়কগুলোর দিকে তাকালে এবং সেখানে জনগণের প্রতি মার্কিন সরকারের কর্মকর্তাদের আচরণ লক্ষ্য করলে সেখানে শ্রেণী-বৈষম্যের ব্যাপক গভীরতা, নির্বাচিত প্রশাসকদের মূর্খতা ও ভয়াবহ জাতিগত বৈষম্য সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে।’ তিনি বলেন, ‘মার্কিন সরকার দুর্বল জাতিগুলোর সঙ্গে যে আচরণ করছে তা থেকেই পুলিশ শিক্ষা নিয়েছেমাত্র যে পুলিশ একজন অসহায় কৃষ্ণাঙ্গের গলার ওপর তার হাঁটুর চাপ দিতেই থাকে যতক্ষণ না তার মৃত্যু হয়।’

যাইহোক, যুক্তরাষ্ট্রের অমানবিক আচরণ আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে মহামারি করোনা পরিস্থিতিতেও ইরানের বিরুদ্ধে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া থেকে। আমেরিকা ও তাদের ইউরোপীয় মিত্ররা মানবাধিকারের কথা বলে অথচ তারাই ইরানের বিরুদ্ধে চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধের সময় সাদ্দামকে রাসায়নিক অস্ত্র যুগিয়েছিল। তারা এখন ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী গ্রুপকেও পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে যারা কিনা হাজার হাজার নিরীহ ইরানিকে হত্যা করেছে। এ কারণে মানবাধিকারের ব্যাপারে বক্তব্য খুবই হাস্যকর। কারণ তারাই মানবাধিকার লঙ্ঘনের মূল হোতা।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com