হার মানল সিনেমার গল্প, খুন করে জেলে ঢুকে বোনের ধর্ষককে হত্যা

0

৬ বছর আগে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে জেলে যায় এক তরুণ। তবে বোনের ধর্ষণের প্রতিশোধ নিতেই জেলে যান কিশোরীর বড় ভাইও। আর জেলের ভেতরেই বন্দী সেই ধর্ষণকারীকে কুপিয়ে হত্যা করেন তিনি। এ যেন কোনো এক সিনেমার গল্প। কিন্তু না, ভারতের দিল্লির তিহাড় জেলখানায় এমনই এক হত্যার ঘটনা ঘটেছে।

মূলত, তিহাড় জেলে সাজাপ্রাপ্ত কুখ্যাত অপরাধীরাই থাকেন। সেখানেই ভয়ঙ্কর এ হত্যাকাণ্ড ঘটে গেল। ধাতব বস্তু দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বোনের ধর্ষণকারীকে। মূলত বোনের ধর্ষণের বদলা নিতেই তিনি জেলে ঢোকেন।

সোমবার (৩০ জুন) সকালে তিহাড় জেলের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম মহম্মদ মেহতাব (২৭)। তাকে কুপিয়ে খুন করেছে ২১ বছরের জাকির।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মেহতাব মূলত নিজামুদ্দিনের বাসিন্দা। দক্ষিণপুরীর বাসিন্দা জাকির। দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিনের পরিচয়। সেই সূত্রে জাকিরদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল মেহতাবের। কিন্তু ২০১৪ সালে জাকিরের কিশোরী বোনকে ধর্ষণ করে সে। তার জেরে আত্মঘাতী হয় ওই কিশোরী।

সেই ঘটনায় ২০১৪-তেই সাজা হয়ে যায় মেহতাবের। সেই থেকে তিহাড়ে বন্দী ছিল সে। কিন্তু বোনের ধর্ষকের প্রতি রাগ মেটেনি জাকিরের। প্রতিশোধের নেশায় ২০১৮ সালে খুন করে তিহাড় জেলে ঢোকে সে। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় সেইসময় জেলের অন্য বিভাগে রাখা হয় তাকে। সেই থেকে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার অপেক্ষা করছিল জাকির। এ বছর ২১-এ পা দিতেই ৫ নম্বর ওয়ার্ডে সরিয়ে আনা হয় তাকে।

কিন্তু মেহতাবের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে জায়গা পেতে জেলের অন্য বন্দীদের সঙ্গে ইচ্ছাকৃতভাবে ঝামেলা বাধাতে থাকে সে। কয়েকজনের সঙ্গে হাতাহাতিও বেধে যায় তার। তাকে ৮ নম্বর জেলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য জেল কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানায় জাকির। সেই মতো কিছু দিন আগে তাকে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে সরিয়ে আনা হয়। সেই থেকে মেহতাবের ওপর নজর রাখতেও শুরু করে সে।

সোমবার সকালে প্রার্থনায় যোগ দেয়ার ডাক পড়লে দলে দলে কুঠুরি ছেড়ে বেরোতে শুরু করে বন্দীরা। সেই সুযোগে মেহতাবের কুঠুরিতে চলে আসে জাকির। সেখানে তাকে একা পেয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে জাকির। একটি ধারাল ধাতব পাত দিয়ে মেহতাবকে এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করে। তার জেরে মেহতাবের ঘাড়ে, গলায়, পেটে এবং শরীরের একাধিক জায়গায় গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়।

মেহতাবের চিৎকার শুনে ওই কুঠুরিতে ছুটে আসেন পুলিশকর্মীরা। জাকিরকে নিরস্ত করে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তড়িঘড়ি দীনদয়াল উপপাধ্যায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় মেহতাবকে। কিন্তু সেখানে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এই ঘটনায় হরি নগর থানায় জাকিরের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের হয়েছে। জেরায় অপরাধ স্বীকার করে সে। বোনের ধর্ষণের প্রতিশোধ নিতেই মেহতাবকে খুন করে বলে জানায়।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com