ফুলবাড়িয়া নির্মাণ শেষ না হতেই ভবনে ধস,গৃহহীনের ঘরে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার

0

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায় গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণের ক্ষেত্রে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারসহ নানা অনিয়মেরঅভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্মাণ শেষ না হতেই ঘরগুলোর ইটের দেয়াল ধসে পড়তে শুরু করেছে। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনারআশঙ্কা করছেন এসব ঘরে বসবাসকারীরা।

২০১৯-২০২০ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহনির্মাণ কাজ শুরু করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায় ১৯ জনগৃহহীনের জন্য ১৯টি ঘর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে ৯টি ঘরের নির্মাণ কাজ শুরু করে নাটোরের লাস্টার নামের একএনজিও। এই এনজিওর বিরুদ্ধে ঘর নির্মাণে নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছেন উপজেলার পাটিরা গ্রামের হতদরিদ্র মিনারাখাতুন। তিন মাস ঘরে পড়ে থাকা সিমেন্টে কাজ করা, দেয়াল বাঁকা হয়ে যাওয়া, মানহীন রড এবং দেয়াল ধসে পড়াসহ নানাত্রুটি দেখা দেয় মিনারার নির্মাণাধীন ঘরটিতে। তিনি আশঙ্কায় আছেন ঝড়বৃষ্টি কিংবা ছোটখাটো ভূমিকম্প হলে তার ঘরটিভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। মিনারা অভিযোগ করেন, সংশ্নিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি করে নিম্নমানের সামগ্রীব্যবহার ও বেশকিছু ত্রুটি নিয়ে তার ঘর নির্মাণ করছে। এর প্রতিবাদ করায় সংশ্নিষ্ট মহল তাকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এসব বিষয়ে

উপজেলা ভূমি অফিস, ইউএনও এবং ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেও কোনো ফল পাননি বলে 

জানান তিনি। 

এ কাজের সার্বিক তদারকি করছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস। চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে কাজ শুরু হয়েছে। কাজ শেষকরার কথা জুন মাসে। ১৯টি ঘরের ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলা হলেও ঘরগুলোর ইটের দেয়াল এরই মধ্যে ধসে পড়তেশুরু করেছে। ধস থেকে রক্ষার জন্য গৃহহীনরা বাঁশ দিয়ে দেয়াল ও পিলার ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। 

সরেজমিন ভবানীপুরের যমুনারপাড় গ্রামের দরিদ্র শ্রমিক এমদাদুল হকের নির্মাণাধীন ঘরে গিয়ে দেখা যায়, আঁকাবাঁকা করে ইটেরগাঁথুনি দেওয়ার কারণে ঘরের দেয়াল ও পিলার বেঁকে গেছে। দেয়ালে পানি দিতে গিয়ে পিলার ভেঙে পড়ে আহত হয়েছেএমদাদুলের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ূয়া মেয়ে শাবনূর। ঘরের দেয়াল ও পিলারগুলো ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করতে তারা বাঁশ দিয়েঠেকা দিয়ে রেখেছেন। এমদাদুল বলেন, পিলার ভেঙে পড়ার পর স্ত্রী-সন্তান এখন পাকা ঘরে থাকার কথা শুনে ভয় পায়।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন জানান, ১৯টি ঘরের মধ্যে ৯টি ঘরের নির্মাণ কাজ এখন শেষের দিকে।ঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ বিষয়ে তিনি বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে একটি প্রজেক্ট কমিটি করা হয়েছে। ওইকমিটি কাজ বাস্তবায়ন করছে।

কালাদহ ইউপি চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মাস্টার ঘর নির্মাণে অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, প্রজেক্ট কমিটি করা হলেওআমাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করে না।

লাস্টার এনজিওর নির্বাহী পরিচালক হাসানুজ্জামান ঘর নির্মাণে অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, ইটগুলো রাজমিস্ত্রিরাঠিকমতো গাঁথতে পারেনি বলেই দেয়াল ও পিলার বাঁকা হয়েছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com