করোনার প্রভাবে ধারাবাহিকভাবে কমছে রেমিট্যান্স

0

ধারাবাহিভাবে কমছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাসী আয়ের ওপর। গত মার্চ ও এপ্রিলের ধারাবাহিকতায় গত মে মাসেও রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ১৪ শতাংশ হয়েছে। সামনে এ ধারা অব্যাহত থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, করোনার প্রভাবে রেমিট্যান্স প্রবাহেও বড় ধরনের ভাটা পড়ে গেছে। শ্রমিকরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় বলা চলে গত তিন মাস যাবত প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে রেমিট্যান্স আসা। সামনের দিনগুলোতে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও ভয়াবহ আকারে কমে যেতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান, গত মার্চের আগে প্রায় প্রতিমাসেই গড়ে ২০ শতাংশের ওপরে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পেত। বিশেষ করে রেমিট্যান্সের ওপরে ২ শতাংশ প্রণোদনা দেয়ার পর রেমিট্যান্স প্রবাহ আরো বেড়ে যায়। সেই রেমিট্যান্স প্রবাহ গত এপ্রিলে ২৪ শতাংশ ঋণাত্মক হয়েছে।

এদিকে আগের বছরের একই মাসের তুলনায় রোজা ও ঈদের মাস গত মেতে রেমিট্যান্স কমেছে ২৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার। আগের বছরের একই মাসের তুলনায় যা ১৪ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ কম। করোনাভাইরাসের প্রভাব ব্যাপকভাবে শুরুর আগের মাস গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি ছিল ২০ দশমিক ২০ শতাংশ। গত এপ্রিল মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা মাত্র ১০৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠায়। আগের বছরের একই মাসের তুলনায় যা ৩৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বা ২৪ দশমিক ২৭ শতাংশ কম। বিশ্বব্যাপী করোনার প্রভাব ব্যাপকভাবে শুরুর প্রথম মাস গত মার্চে রেমিট্যান্স ১৮ কোটি ২০ লাখ ডলার বা ১২ দশমিক ৪৮ শতাংশ কমে ১২৭ কোটি ৭৬ লাখ ডলারে নেমেছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশের দেশের প্রায় এক কোটি মানুষ বিদেশে অবস্থান করছে। রেমিট্যান্স প্রবাহের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ রেমিট্যান্স আসে মধ্যপ্রাচ্য থেকে। ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে আসে ১২ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আর ইটালিতে বৈধ-অবৈধভাবে থাকে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রভাবে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে বেশির ভাগ মানুষ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হচ্ছে না।

সৌদি আরব থেকে মো: আমির হোসেন নামক এক প্রবাসী জানান, তারা মূলত গত দেড় মাস যাবত অবরুদ্ধ রয়েছেন। ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। কোম্পানির পক্ষ থেকে চাল ডালসহ কিছু তরিতরকারি দিয়ে গেছে। এগুলো খেয়েই তারা ঘরের মধ্যে দিন যাপন করছেন। কাজ নেই। বসে বসে খাচ্ছেন। দেশ থেকে ঋণ করে সৌদি আরব এসেছেন। এভাবে কাজহীন বসে থাকলে ঋণ কিভাবে পরিশোধ করবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। আমির হোসেনের মতো আরো অনেকেই আছে যারা বেকার ঘরে বসে আছে।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের একমাত্র সচল রাস্তা ছিল রেমিট্যান্স প্রবাহ। কিন্তু রেমিট্যান্স প্রবাহ অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোতেও বৈদেশিক মুদ্রার আন্তঃপ্রবাহ কমে গেছে। এতে ব্যাংকগুলোর আমদানির দায় মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com