হার্ড ইমিউনিটি থেকে পৃথিবী এখনো অনেক দূরে
মহামারি করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আসতে এখনো অনেক দেরি। নতুন এক গবেষণার সূত্র ধরে এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে এমনটা জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি তুলে ধরে তারা প্রতিবেদনটি তৈরি করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হার্ড ইউমিনিটি বা গণসংক্রমণ পদ্ধতিকে অনেক দেশই করোনা মোকাবিলার পদ্ধতি হিসেবে অবলম্বন করলেও বেশিরভাগ দেশেই মোট জনসংখ্যার খুব কম অংশই এখন পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত হয়েছে। মোট জনগোষ্ঠীর কত শতাংশ আক্রান্ত হলে হার্ড ইমিউনিটি অর্জিত হবে তা নিয়ে পরিষ্কার ধারণা নেই। কিছু বিশেষজ্ঞ বলছেন, এ হার ৬০ শতাংশের বেশি হতে হবে। যা অর্জিত হলে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে।
তবে বাস্তবতা হলো বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত শহরের জনগণের বিশাল অংশ এখনো করোনায় সংক্রমিত হয়নি।
নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, সুইডেন ও ব্রিটেন সীমিত আকারে লকডাউন পালন করে। তারা তাদের জনগণের মধ্যে হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের পদ্ধতি বেছে নেয়। তবে এ দুই দেশে মাত্র সাত থেকে ১৭ ভাগ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এখন পর্যন্ত।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নিউইয়র্ক শহরে করোনার আঘাত ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। সেখানেই সংক্রমণের হার মাত্র ২০ শতাংশ। দেশটির কয়কটি দোকান ও কেনাকাটার জায়গায় জরিপ চালিয়ে এ ফলাফল পাওয়া গেছে।
একইভাবে চীনেও বেসরকারি জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, দেশটির মাত্র দশ ভাগ জনতা করোনার অ্যান্টিবডি অর্জন করে কাজে ফিরেছে।
হার্ভার্ড টি এইচ চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথ এর মহামারি গবেষক মাইকেল মিনা বলেন, আমাদের পক্ষে নিরাপদ কোনো পদ্ধতি নেই হার্ড ইমিউনিটিতে পৌঁছানোর।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির ২০ ভাগ মানুষ কভিড-১৯ দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। যেখানে মৃত্যুর সংখ্যা ১৮ হাজার। মৃত্যুর হার প্রায় এক শতাংশ।
কভিড-১৯ রোগটি এর আগে পৃথিবীতে ছিল না। ফলে মানুষের শরীরে এর অ্যান্টিবডি তৈরি হয়নি। চিকেন পক্স এ এক সময় অনেক শিশু মারা যেত। কিন্তু এখন আর তা হয় না। কারণ এর ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে। নভেল করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন এখনো তৈরি হয়নি। ফলে হয় আক্রান্ত হওয়ার মাধ্যমে শরীরে এ রোগের অ্যান্টিবডি তৈরি করতে হবে অথবা বাইরে থেকে শরীরে অ্যান্টিবডি প্রবেশ করাতে হবে। যার সম্ভাবনা এখনো দেখা যাচ্ছে না। ফেলে এ রোগে সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়বে।
অল্প জনগোষ্ঠীতে সংক্রমণের হার এক শতাংশ হলেও মৃত্যুর সংখ্যা বেশি জনগোষ্ঠীতে আরো বেশিই হবে।