সপ্তাহের অপরাধ চিত্র

0

পুরো বিশ্ব আজ করোনা ভাইরাস নামক মহামারী পরিস্থিতি নিয়ে আতঙ্কিত, কিন্তু থেমে নেই অপরাধ জগতের অপরাধীদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড,। কিছু অপরাধী জন্ম নেয় কলুষিত সমাজের জীবন ধারায় বেড়ে উঠা ব্যক্তিত্ব নিয়ে, আবার কিছু অপরাধীর জন্ম হয় রাজনৈতিক সংগঠনের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে রাজনৈতিক শীর্ষ নেতাদের এক বিছানা ভাগাভাগি করে নেয়া সহ সর্বাধিক শক্তি সঞ্চয় করার মাধ্যমে। তাই প্রতিনিয়ত ক্ষমতার বল প্রয়োগ করে আইন-আদালতকে কোনো প্রকার তোয়াক্কা না করেই একের পর এক অপরাধ করে যাচ্ছে অপরাধীরা,। যেনো এক মাফিয়া রাজ্যের সম্রাট হবার প্রতিযোগিতায়,। এমন পরিস্থিতিতে আদালতের মাধ্যমে কিছু অপরাধীকে সুনির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে অপরাধী হিসেবে শনাক্ত করা গেলেও পরবর্তীতে সেইসব অপরাধীরা রাজনৈতিক নেতাদের যোগসাজশে আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে বেড়িয়ে ক্ষমতার বহাল তবিয়তে থেকে ফের বেপরোয়া হয়ে উঠে অপরাধ চক্রের অপরাধীরা,। এসপ্তাহের ঠিক এমন কিছু অপরাধ কর্মকাণ্ডের সংবাদ DL TV নিউজ এর সাপ্তাহিক অপরাধ চিত্রে উঠে এসেছে, এবং তা পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো,।

10/5/2020 বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে স্বামীকে দিয়ে ধর্ষণ করালেন আ.লীগ নেত্রী

সিলেটের জৈন্তাপুরে লিডিং ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও ধর্ষণের দৃশ্য মুঠোফোনে রেকর্ড করার অভিযোগে অভিযুক্ত খালু ও খালাকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৯।

গ্রেফতার সুমি বেগম (৩০) নির্যাতিত ছাত্রীর সম্পর্কে খালা জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তার স্বামী কয়েছ আহমদ (৩৫) জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের কমলাবাড়ী মোকামটিলা এলাকার রেনু মিয়ার ছেলে।

জৈন্তাপুর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের বেসরকারি লিডিং ইউনিভার্সিটি বন্ধ থাকায় ওই তরুণী বর্তমানে জৈন্তাপুরে নিজ বাড়িতে রয়েছেন। খালা সুমি বেগম প্রায়ই ওই ছাত্রীকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে নানা গল্প করতেন। গত ২ মে ইফতারের দাওয়াত দিয়ে ওই তরুণীকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান সুমি। ইফতার শেষে রাত ৮টার দিকে সুমি বেগম ওই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে চায়ের সাথে ঘুমের ও নেশা জাতীয় ওষুধ মেশিয়ে খেতে দেন। চা খেয়ে অচেতন হয়ে পড়েন তরুণী। এরপর সুমি বেগমের সহায়তায় তার স্বামী কয়েছ আহমদ ভিকটিমকে ধর্ষণ করে এবং সুমি বেগম মুঠোফোনে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন।

পরে চেতনা ফিরে আসলে চিৎকার করে ওঠেন তরুণী ওই ছাত্রী। এসময় কয়েছ আহমদ তার মুখ চেপে ধরেন।

পুলিশ জানায়, পরে ওই তরুণীর বাবা এসে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান এবং আত্মীয়-স্বজনের পরামর্শে সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করেন।

পরে গত ৪ মে এই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী নিজে বাদী হয়ে জৈন্তাপুর থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ ও নারী এবং শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ২০। মামলার পরিপ্রেক্ষিত র‍্যাব -৯ এর একটি দল গত শুক্রবার (৮ মে) মধ্যরাতে জৈন্তাপুরের কমলাবাড়ি মোকামটিলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে কয়েছ আহমদ ও তার স্ত্রী সুমি বেগমকে আটক করে।

জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল বনিক বলেন, আসামিরা এ অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। আমরা তাদের ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছি। আসলে সুমি বেগম ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর দৃশ্য মুঠোফোনে রেকর্ড পর্নো ভিডিও তৈরি করতে চেয়েছিলেন। আদালত তাদের স্বামী-স্ত্রীকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

10/5/2020 গভীর রাতে আ‘লীগ অফিসে নারীকে বেঁধে এনে সালিশ করেন দলীয় নেতারা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শ্যামগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক নারীকে গভীর রাতে বেঁধে এনে শালিস করেন ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন ধনু মেম্বার ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সহ দলীয় নেতারা। শালিসে ওই নারী এবং তার দেবরকে সোয়া লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এর আগে তাদের মেরে বিবস্ত্র করে আপত্তিকর অবস্থায় ছবি তোলেন। এই ঘটনায় নির্যাতিত নারী শনিবার নবীনগর থানায় চাঁদাবাজি ও পর্নোগ্রাফী আইনে পাঁচজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারভুক্ত আসামি শ্যামগ্রাম ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রঞ্জন দেবনাথ, সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, শ্যামগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য ও যুবলীগ নেতা বোরহান উদ্দিন ছুট্টু, জাহিদুল ইসলাম দুলালসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মামলার অপর আসামি আওয়ামী লীগ নেতা ধনু মেম্বারের সিএনজি চালক শ্যামগ্রামের সোনা মিয়ার ছেলে জয়নাল আবেদীন পলাতক রয়েছেন। এ ঘটনার পর দল থেকে ধনু মেম্বারকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।

জানা যায়, উপজেলার শ্যামগ্রামের ৫নং ওয়ার্ডের ইউসুফ মিয়ার মেয়ে হোসনা বেগমের বিয়ে হয় ছয় বছর আগে একই ইউনিয়নের কুড়িনাল গ্রামের দুবাই প্রবাসী মোশাররফ পারভেজের সাথে। এই দম্পতির আরাফাত নামে পাঁচ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। স্বামীর সাথে গত কয়েক মাস ধরে বিরোধ চলছে। তার পর থেকে বাবার বাড়িতে বসবাস করছেন হোসনা আক্তার। স্বামীর সাথে বিরোধ মিটানোর জন্য তার শশুরবাড়ির আত্মীয় কুড়িনাল গ্রামের শামীমের সাথে (সর্ম্পকে দেবর) গত ৩ মে ইফতার শেষে আলোচনা করছিলেন তিনি। ওই সময় মামলায় উল্লেখিত আসামিরা ঘরে ঢুকে তাদের দু’জনকে মারধর করে। এক পর্যায়ে তাদের বিবস্ত্র করে জড়িয়ে ধরিয়ে আপত্তিকর অবস্থায় ছবি তোলতে বাধ্য করা হয়। পরে তাদের বেঁধে রাত ১১টার দিকে শ্যামগ্রাম বাজারে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন ধনু মেম্বারের নেতৃত্বে সালিশ করে দু’জনকে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। যার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা নগদ ও বাকি টাকা এক সপ্তাহের মধ্যে পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়। পরে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে পরিবারের জিম্মায় দু’জনকে ছেড়ে দেয়া হয়। জরিমানা করা হলো দু’জনকে, তা হলে এই টাকা কারা পাচ্ছেন? এই প্রশ্ন এবং ওই নির্যাতনের ঘটনায় এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়।

নাজিম উদ্দিন ধনু মেম্বার দাবি করেন, ছেলে-মেয়েটিকে এলাকার মানুষ ধরে এনেছিলো আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে। পরে তাদের বিচার করে অভিভাবকের নিকট বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। কোনো টাকাপয়সার লেনদেন হয়নি। বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে এই মর্মে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রাখা হয়েছে।

এ ব্যাপারে নির্যাতিত শামীম মিয়া বলেন, ‘আমাকে মাইরধইর করে কাপড় খুলে ছবি তুলেছে। পরে হাত বেঁধে ধনু মেম্বারের অফিসে নিয়া মিথ্যা অপবাদ দিয়া আমারে এক লাখ টাকা জরিমানা করছে। ৫০ হাজার টাকা দিয়া ছুইটা আইছি।’

নির্যাতনের শিকার হোসনা বেগম বলেন, ‘আমার জামাইর সাথে পারিবারিক ঝামেলা চলতাছে, তাই আমার মামাশশুরের ছেলে শামীম আমাদের বাড়িতে আসার পর কথা কইতাছিলাম, তখন হেরা(আসামী) আইসা আমরারে মাইরধইর করে পড়নের কাপর খুলে ভিডিও করছে। ওই সময় আমার প্রতিবন্ধী ছেলে কান্না করলে তাকে খাট থেকে নিচে ফেলে দিয়েছে। হেরা বলতেছে আমি নাকি দেবরের সাথে খারাপ কাজ করেছি। পরে ধনু মেম্বারের অফিসে নিছে বাইনদ্যা, আমরা দুইজনকে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করছে। জরিমানার টাকা না দিলে তাদের তোলা ছবি ফেইসবুকে দিয়ে দিবে বলে হুমকি দিচ্ছে। এই অপমানের সঠিক বিচার না পাইলে আমি আত্মহত্যা করব।’

শ্যামগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান এ ঘটনার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বলেন, ধনু মেম্বার ও তার লোকজনের এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য অবিলম্বে দল থেকে তাকে (ধনু মেম্বার) বহিষ্কার করার দাবি করছি এবং এই ঘটনার সাথে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হোক।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লোকমান হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ অফিসে এক নিরহ নারীর এবং যুবককের উপর নির্যাতন ও জরিমানার ঘটনায় দলের ভাবমূর্তি নস্ট হয়েছে, এই ঘটনার জন্য ধনু মেম্বারকে দল থেকে বহিষ্কার সহ দূষ্টান্ত মূলক বিচার দাবি করছি।

এ বিষয়ে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রনোজিত রায় বলেন, এ ঘটনায় পাঁচজনকে আসামি করে চাঁদাবাজি ও পর্নোগ্রাফী আইনে একটি মামলা হয়েছে। চারজনকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পলাতক এক আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। মামলাটি গুরুত্ব সহকারে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।

10/5/2020 ছুরিকাঘাত করে ৬ লাখ টাকা ছিনতাই, ২ সহযোগীসহ জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আটক

পাবনায় প্রকাশ্য দিবালোকে এক ব্যবসায়ীর নগদ প্রায় ছয় লাখ টাকা ও আরও সাত লাখ টাকার চেক ছিনতাই করে পালানোর সময় জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রুহুল আমিন ও তার তিন সহযোগীকে আটক করেছে পুলিশ।

রোববার দুপুরে জেলার সাঁথিয়া উপজেলার ভুলবাড়িয়া ইউনিয়নের বৃহস্পতিপুর বাজার থেকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রুহুল আমিন (২৭) তার অনুসারী রানা হক (২৭) এবং শিপন হোসেন (২৫)। রুহুল আমিন জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম।

আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রোববার দুপুরে সাঁথিয়া এলাকার ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম নগদ পাঁচ লাখ পঁচাশি হাজার আটশত টাকা ও সাত লক্ষ টাকার চেক অগ্রণী ব্যাংক আতাইকুলা শাখায় জমা দিতে যাচ্ছিলেন। পথে বৃহস্পতিপুর বাজার এলাকায় ভীড়ের মধ্যে রুহুল আমিন ও তার সহযোগীরা ছুরি দিয়ে আঘাত করে তার নিকট থেকে টাকা ও চেক ছিনিয়ে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় ব্যবসায়ী সিরাজুলের চিৎকারে স্থানীয়রা রুহুল ও তার তিন সঙ্গীকে আটক করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। ওসি জানান, আটক যুবকদের কাছ থেকে ছিনতাই করা নগদ চার লাখ বিশ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে আতাইকুলা থানায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সিরাজুল বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।

11/5/2020 সকালে আটক, দুপুরেই জামিন পেয়ে গেলেন শিক্ষক পেটানো সেই চেয়ারম্যান

কুমিল্লার দেবিদ্বারে বিচারের নামে শিক্ষক ও নারী-শিশু পেটানো সেই আলোচিত চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা সদরের নিউ মার্কেট এলাকা থেকে উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়ন পরিষদের ওই চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করা হয়।

পরে দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করার পর আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দেবিদ্বার থানা পুলিশের এসআই মো. ইকতিয়ার।

তিনি আরও জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দুটি মামলায় এজাহারনামীয় আসামি ওই চেয়ারম্যানকে উপজেলা সদরের নিউ মার্কেট এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে দুপুরের দিকে দুটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আমলী আদালত-৪) আদালতে হাজির করা পর আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত ৯ এপ্রিল পারিবারিক বিরোধ মেটানোর নামে ওই চেয়ারম্যান একই ইউনিয়নের বেতরা দাখিল মাদরাসার শিক্ষক আজিজুর রহমানকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেন। এ ঘটনায় ওই শিক্ষক বাদী হয়ে গত ১৬ এপ্রিল চেয়ারমানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন।

অপর ঘটনায় একই ইউনিয়নের উখারি গ্রামের মো. ওয়ালিউল্লাহর শিশু পুত্র শরীফ (১০) এবং স্ত্রী কাজল বেগমকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বিচারের নামে মারধর করার ঘটনায় কাজল বেগম বাদী হয়ে গত ১৯ এপ্রিল চেয়ারম্যান ও তার ভাতিজা শামীমের বিরুদ্ধে থানায় পৃথক আরও একটি মামলা করেন। দুটি মামলায় প্রায় ৩ সপ্তাহ আত্মগোপনে ছিলেন চেয়ারম্যান।

এছাড়াও ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিগত প্রায় ৯ বছরে এলাকার বিভিন্ন লোককে বিচারের নামে নির্যাতনসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ইউনিয়নের ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম গত ২০ এপ্রিল কুমিল্লা জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ দাখিল করেন। এসব অভিযোগ বর্তমানে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক তদন্ত করছেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে চেয়ারম্যানের হাতে নির্যাতিত ও মামলার বাদী মাদরাসা শিক্ষক মাওলানা আজিজুর রহমান ক্ষোভের সাথে জানান, মামলার পর থেকে থানা পুলিশ চেয়ারম্যানকে আটকের কোনো চেষ্টাই করেনি। দুটি মামলার আসামি হয়েও তিনি (চেয়ারম্যান) পরিষদের কাজ চালিয়ে গেছেন। আত্মগোপনে থাকা সেই চেয়ারম্যান রোববার সকালে থানার অদূরে নিউ মার্কেট এলাকায় এসে বসে থাকবে, পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করলো, আদালতে নেয়া হলো, জামিন হয়ে গেল। সবই রহস্যজনক। এসব লুকোচুরির বিষয়ে ন্যায় বিচারের স্বার্থে তিনি কুমিল্লা পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন।

12/5/2020 বান্দরবানে স্কুল নির্মাণে রডের পরিবর্তে বাঁশ আওয়ামী লীগ নেতার

পার্বত্য জেলা বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার কুরুকপাতা মৈত্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণে লোহার রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় আপাতত কাজ বন্ধ রাখতে ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। 

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, কুরুকপাটা মৈত্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের ড্রপ দেয়ালে লোহার রডসহ বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। সিএইচটিডিবির উপ-সহকারী প্রকৌশলী ত্রিদিব কুমার ত্রিপুরা জানান, “অভিযোগ শুনেই আমি  ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখলাম যে বিদ্যালয়ের ভবনের ড্রপ প্রাচীর নির্মাণে বাঁশ ব্যবহার করা হচ্ছিল। এতে তৎক্ষণাৎ, আমরা ড্রপ প্রাচীরটি ভেঙে দিয়ে বাঁশ ব্যবহার করায় ঠিকাদারকে সতর্ক করেছি। দোষী ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুরুকপাতা মৈত্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ইনচার্জ) আবু সামা জানান, ‘আমরা বহুবার সিএইচটিডিবি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি যে ঠিকাদার লোহার রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার করছে। তবে তারা দীর্ঘদিন আমাদের অভিযোগের প্রতি মনোযোগ দেয়নি।’

প্রধান আরও শিক্ষক জানান, ২০১৩ সালে জাতীয়করণ করা এই স্কুলে মোট ১৭৯ জন শিক্ষার্থীর বেশিরভাগ ম্রো সম্প্রদায়ের। 

একটি ড্রপ দেয়ালে বাঁশ ব্যবহার করার কথা স্বীকার করেছেন ভবনটির ঠিকাদার, আওয়ামী লীগের আলীকদম উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি ও আলীকদম সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন।

কুরুকপাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ক্রেপ পুং ম্রো বলেছেন, সত্যিই এটি দুর্ভাগ্যজনক যে একটি স্কুল ভবন নির্মাণে বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য বিশাল ঝুঁকি সৃষ্টি করে। মৈত্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি কুরুকপাটা ইউনিয়নের একমাত্র সরকারি বিদ্যালয়।

বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক দাউদুল ইসলাম।

13/5/2020 ইফতার বিতরণের সময় পৌর মেয়রকে পেটালো যুবলীগ

ইফতার সামগ্রী বিতরণের সময় দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌরসভার মেয়র বিএনপি নেতা আব্দুস ছাত্তার মিলনের ওপর হামলা করেছে উপজেলা যুবলীগের একটি গ্রুপ। হামলায় মেয়র আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় পুলিশ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীরসহ চার নেতাকে গ্রেফতার করেছে।

মঙ্গলবার (১২ মে) ইফতারের আগ মুহূর্তে ঘোড়াঘাট উপজেলা চত্বরে পৌরসভার মেয়র আ. ছাত্তার মিলনকে বেদম মারপিট করেন যুবলীগের সভাপতিসহ ১০-১২ জন। এ ঘটনায় ওই নেতাদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন এলাকার জনগণ।

ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম জানান, গত কয়েক দিন আগে করোনার প্রভাবে কর্মহীন, গরিব ও অসহায় লোকজনের মাঝে পৌরসভার ত্রাণ দেয়াকে কেন্দ্র করে মেয়রের সঙ্গে যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীরসহ ১০-১২ জনের বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে থানা পুলিশ জাহাঙ্গীর ও যুবলীগ নেতা নান্নুকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে তাদের ছেড়ে দেয়।

মঙ্গলবার (১২ মে) ইফতারের আগ মুহূর্তে ঘোড়াঘাট উপজেলা চত্বরে ইফতার বিতরণ করছিলেন ঘোড়াঘাট পৌর বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র আ. ছাত্তার মিলন। এ সময় মেয়রের ওপর হামলা চালায় তারা। তাকে মারপিট করে রক্তাক্ত যখম করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর ও নান্নুসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করে।

এদিকে পৌর মেয়র আব্দুস সাত্তার মিলনকে মারপিট করার প্রতিবাদে ও আটক যুবলীগ নেতাদের শাস্তির দাবিতে ঘোড়াঘাটে সন্ধ্যায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেন এলাকার জনগণ। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে জনগণের সঙ্গে স্থানীয় এমপি কথা বলেন।

এমপি শিবলী সাদিক বলেন, ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্যদেরও গ্রেফতার করা হবে। বিচার নিশ্চিত করা হবে। এমপির এমন আশ্বাসে জনগণ শান্ত হয়।

এ ঘটনায় পৌর মেয়র আব্দুস সাত্তার মিলন বাদী হয়ে গোড়াঘাট থানায় একটি মামলা করেছেন।

13/5/2020 চরম নিষ্ঠুরতা, ত্রাণ পেতে ভিক্ষার চাল বিক্রি করে মেম্বারকে ঘুষ

চাল নেই, চুলা নেই, নেই বসতঘর। স্বামী নেই, সন্তান নেই, নেই সহায়-সম্বল। ঠিক এতটা অসহায় একজন মানুষ কোহিনুর বেগম (৬২)। বরগুনা সদর উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের চালিতাতলী এলাকার বাসিন্দা তিনি।

বয়সের ভারে ন্যুব্জ। রোগে শোকে হারিয়েছেন শারীরিক সক্ষমতা। দু’চোখে ঠিকমতো দেখেন না। ভিক্ষাবৃত্তি করেই চলছিল জীবনের শেষ দিনগুলো। কিন্তু মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাবে থেমে গেছে তার জীবন-জীবিকা। করোনার সংক্রমণ রোধে অপরিচিত এমনকি পাড়া-প্রতিবেশীদের বাড়িতে আসতে দিচ্ছেন না কেউ। তাই ভিক্ষার পথ বন্ধ হয়ে গেছে কোহিনুর বেগমের।

একদিকে রমজান মাস; তার ওপর প্রচণ্ড দাবদাহ। কোনোভাবেই জ্বলছিল না ঘরের চুলা, দমছিল না পেটের ক্ষুধা। নিরুপায় হয়ে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শামীম গাজীর কাছে ছুটে যান বৃদ্ধা কোহিনুর বেগম। প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা পাইয়ে দিতে বৃদ্ধার ভিক্ষা করে পাওয়া চাল বিক্রি করে দুই হাজার টাকা নিয়েছেন ইউপি সদস্য (মেম্বার) শামীম গাজী।

পরে বিষয়টি জানাজানি হয়। নির্মম ঘটনাটি শুনে সোমবার সন্ধ্যায় বৃদ্ধার কাছে ছুটে যান বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান হোসেন। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে বৃদ্ধার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা নেয়ার সত্যতা পান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা পাইয়ে দেয়ার কথা বলে আরও কয়েকজন দরিদ্র ব্যক্তির কাছ থেকে ইউপি সদস্য শামীম গাজী ও তার বাবা কাদের গাজী ঘুষ নিয়েছেন বলে জানতে পারেন তিনি।

বরগুনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবির মোহাম্মদ হোসেন বলেন, নির্মম ঘটনাটি শুনে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান হোসেন সোমবার সন্ধ্যায় বৃদ্ধা কোহিনুর বেগমের বাড়িতে যান। এরপর সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে বৃদ্ধা কোহিনুর বেগমকে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা পাইয়ে দিতে শামীমের ঘুষগ্রহণের অভিযোগের সত্যতা পান। এ ঘটনা তিনি তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে বসেই বরগুনা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে অবহিত করেন।

ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা দিতে শুধু শামীম গাজী একার বিরুদ্ধে ঘুষগ্রহণের অভিযোগ নয়; এরকম অনেক অভিযোগ এসেছে তার বাবা আ. কাদের গাজীর বিরুদ্ধেও। এ বিষয়ে আমরা আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

ওই এলাকার একাধিক দরিদ্র অসহায় মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুধু কহিনুর বেগম নন; একই এলাকার আরও অনেক অসহায় মানুষের কাছ থেকে জনপ্রতি ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা করে ঘুষ নিয়েছেন ইউপি সদস্য শামীম গাজী ও তার বাবা কাদের গাজী।

ওই গ্রামের শ্রমিক আব্দুস সালাম, দিনমজুর বশির আকন, হেলাল মিয়া এবং সেলিনাসহ একাধিক ভুক্তভোগী স্থানীয় ইউপি সদস্য শামীম গাজী ও তার বাবা কাদের গাজীকে ঘুষ দেয়ার কথা জানিয়েছেন।

পরে ইউপি সদস্য শামীম গাজী ও তার বাবা কাদের গাজীর বিরুদ্ধে একই এলাকার আব্দুস সালাম নামে একজন ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ওই অভিযোগে তিনি আরও অনেকের নাম উল্লেখ করেছেন; প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা পাইয়ে দেয়ার কথা বলে যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন ইউপি সদস্য ও তার বাবা কাদের গাজী।

এদিকে, নিষ্ঠুর নির্মমতার শিকার বৃদ্ধা কোহিনুর বেগমের পাশে দাঁড়িয়েছেন বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান হোসেন। আগামী এক মাসের প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী বৃদ্ধার হাতে তুলে দিয়েছেন তিনি। এছাড়া বৃদ্ধাকে সরকারি সবধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দিতে বলেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান হোসেন বলেন, শামীম গাজী ওই বৃদ্ধার সঙ্গে যা করেছেন, এই সঙ্কটকালীন এর থেকে নিষ্ঠুর নির্মমতা আর কিছু হতে পারে না। শুধু শামীম গাজী নন; প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা পাইয়ে দেয়ার আশ্বাসে দরিদ্রদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন তার বাবাও। তাই তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা ওই বৃদ্ধাকে আইনগত সহযোগিতার পাশাপাশি ইতোমধ্যে মানবিক সহায়তা দিয়েছি।

বরগুনার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ইউপি সদস্য শামীম গাজী ও তার বাবা কাদের গাজীর বিরুদ্ধে ঘুষগ্রহণের ঘটনা জেনেছি। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছি; কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

14/5/2020 গৃহকর্মীকে ‘ধর্ষণের পর হত্যা’কে “আত্মহত্যা” বলে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টায় চেয়ারম্যান!

ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালাতে নিহত কিশোরীর মাকে জোর করে স্বাক্ষর করানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে অভিযোগ অস্বীকার করেন মোহনগঞ্জ থানার ওসি।

গত ৯ মে গৃহকর্মী মারুফা আক্তার (১৪) মারা যাওয়ার দুদিন পর ১১ মে হত্যা মামলা নেয় মোহনগঞ্জ থানার পুলিশ। মামলার প্রেক্ষিতে রাতেই অভিযুক্ত নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার ৬ নং সিংধা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মাহবুব মোর্শেদ কাঞ্চনকে আটক করে ১২ মে কোর্টে সোপর্দ করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইউপি চেয়ারম্যান কাঞ্চনের মোহনগঞ্জ বাসায় কিশোরী গৃহকর্মী মারুফা আক্তার (১৪) আত্মহত্যা করার প্রচার চালিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান চেয়ারম্যান নিজেই।

খবর পেয়ে পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এসময় তার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন দেখে স্থানীয় ও স্বজনদের মাঝে সন্দেহের সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনার পর ধর্ষণ ও হত্যা মামলা না নিয়ে উল্টো মেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে সই নেয়ার চেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ করেন মারুফার মা আকলিমা আক্তার। তিনি আরো বলেন তাকে উল্টো পুলিশ পাহারায় সারারাত রেখেছে।

তার মেয়ে শিশুটিকে পাশবিক নির্যাতন করে মারার উপযুক্ত বিচার চেয়েছেন তিনি। চেয়ারম্যান একাধিক মানুষ নিয়ে এই নির্যাতন চালিয়ে শিশুটিকে ‘হত্যা করেছে বলেও অভিযোগ মায়ের।

কিশোরী মারুফা আক্তার (১৪) চেয়ারম্যানের বাড়ির পাশের আলী আকবরের মেয়ে। গত দুই বছর পূর্বে এ বাসায় কাজ করতে আসে। কিশোরীর মা আকলিমা আক্তার চেয়ারম্যানের ছেলের ঢাকাস্থ বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করেন।

মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. আব্দুল আহাদ খান বলেন, এমন কথা সত্য নয়। আমি অনেক আন্তরিক। মেয়ের মাকে আমরা আরো ডেকে এনেছি। লাশ নিয়ে ময়নাতদন্ত করতে দিয়েছি। লাশ দাফন করেই মামলা করতে বলা হয়েছিল।

তবে হত্যা মামলায় চেয়ারম্যান একজনই। আসামি অন্যরা অজ্ঞাত বলে জানান ওসি। তিনি আরো বলেন, আমরা আসামিকে গ্রেফতারও করেছি। সেইসাথে মঙ্গলবার কোর্টে পাঠানো হয়েছিলো। পরবর্তীতে আমাদের কাছে কোনো অরডার আসেনি।

নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মো. একরামুল হাসান জানান, সকল আলামত রাখা হয়েছে। এছাড়া ডিএনএ টেস্ট হচ্ছে। সবগুলো রিপোর্ট আসলে বলা যাবে।

16/5/2020 বিশ্বনাথে মাদকসেবীর হামলায় সাংবাদিক আহত

সিলেটের বিশ্বনাথে মাদকসেবীর হামলায় গুরুত্বর আহত হয়েছেন দৈনিক কালেরকন্ঠ ও সিলেট মিরর পত্রিকার বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি এবং বিশ্বনাথ প্রেস ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী শিপন। শুক্রবার বাদ জুম্মা উপজেলার সদর ইউনিয়নের কারিকোনা গ্রামস্থ বাড়ি থেকে কয়েকশ গজ দূরে বিশ্বনাথ সরকারি কলেজের সামনস্থ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার পথিমধ্যে অমানবিক ও অতর্কিত হামলার শিকার হন সাংবাদিক মোহাম্মদ আলী শিপন।

এসময় সাংবাদিক শিপনের সঙ্গে থাকা নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নগদ ৭০ হাজার টাকা ও দুইটি মোবাইল সেট লুট করে নিয়ে গেছে হামলাকারী দিলোয়ার হোসেন দিলা। দিলা উপজেলার কারিকোনা গ্রামের মৃত জবান আলীর ছেলে। গুরুত্বর আহত অবস্থায় সাংবাদিক মোহাম্মদ আলী শিপন বর্তমানে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এর আগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা গ্রহণ করে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন সাংবাদিক শিপন। বাড়িতে আসার পর শিপনের অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের লোকজন। হামলার খবর পেয়ে থানার এসআই দেবাশীষ শর্ম্মার নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হামলাকারী দিলোয়ার হোসেন দিলা ২০০৩ সালে ‘বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর সড়কে’ সংগঠিত হওয়া একটি বাস ডাকাতি মামলার আসামি ছিল। ২০১৯ সালে থানা পুলিশের দায়ের করা দ্রুত বিচার আইনের একটি মামলার এজাহারনামীয় অভিযুক্ত (আসামি) সে। এছাড়া মাদক সেবনের টাকা জোগার করতে এলাকায় সংঘঠিত হওয়া একাধিক চুরির সঙ্গে সম্পৃক্ততা রয়েছে সাংবাদিকের ওপর হামলাকারী দিলোয়ার হোসেন দিলা। এলাকার একটি প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য হওয়ার কারণে দিলার দীর্ঘদিনের অপকর্মের বিরুদ্ধে এলাকার লোকজন প্রতিবাদ করতে সাহস পান না বলেও জনশ্রুতি রয়েছে।

এদিকে সাংবাদিক মোহাম্মদ আলী শিপনের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েন বিশ্বনাথ প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দ। প্রতিবাদ বার্তার দ্রুত সময়ের মধ্যে হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহবান করা হয়েছে।

নিন্দা প্রকাশকারীরা হলেন- বিশ্বনাথ প্রেস ক্লাবের সভাপতি কাজী মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন, সহ সভাপতি তজম্মুল আলী রাজু, সাধারণ সম্পাদক এমদাদুর রহমান মিলাদ, কার্যনির্বাহী সদস্য মিজানুর রহমান মিজান, রফিকুল ইসলাম জুবায়ের, সদস্য মাওলানা শহিদুর রহমান, নূর উদ্দিন, জামাল মিয়া, আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বেগ, সাধারণ সম্পাদক আব্বাস হোসেন ইমরান, কোষাধ্যক্ষ পাবেল সামাদ, সাংবাদিক অসিত রঞ্জন দেব প্রমুখ।

16/5/2020 যাকাত বিতরণ নিয়ে বিরোধ, প্রতিপক্ষকে গুলি করে খুন

সম্পর্কে সবাই বন্ধু-স্বজন। এক পাড়াতেই বসবাস। রাজনৈতিক আদর্শও এক। রমজানে যাকাত বিতরণ নিয়ে বিরোধের শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত গড়িয়েছে আধিপত্যের বিরোধে, ঝরেছে প্রাণও। এ ঘটনায় নিহতের মুক্তিযোদ্ধা বাবাও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

শুক্রবার (১৬ মে) মধ্যরাতে সেহেরির আগ মুহূর্তে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রাম জেলার চরণদ্বীপ উপজেলায়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, হামলায় নিহত ও হামলাকারীদের সবাই যুবলীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। কিছুদিন আগেও একসঙ্গে রাজনীতি করলেও বর্তমানে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চলছে বিরোধ। মূলত তুচ্ছ ঘটনায় কথা কাটাকাটির শুরু হলেও পরে সেখান থেকে পুরনো বিরোধ নিয়ে ঘটে হামলার ঘটনা।

এ ঘটনায় নাছির (৩৫) নামের এক যুবককে বাড়ি ঢুকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গুলিতে আহত হয়েছেন তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা আলি মদন ও ভাই লোকমান। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

স্থানীয় সাংবাদিক পুজন সেন বলেন, ‘নিজ এলাকায় যাকাত বিতরণ নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান শামসুল আলমের সমর্থক লোকমান ও যুবলীগ নেতা মাহবুবুল আলমের সমর্থক জসিমের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে সে বিরোধ পুরনো রাজনৈতিক বিরোধে রূপ নেয়।’

‘মধ্যরাতে এ নিয়ে লোকমান ও জসিমের মধ্যে কথা কাটাকাটির মাঝেই জসিমের ভাই শওকত অস্ত্র নিয়ে লোকমান ও তার পরিবারের ওপর হামলা করে। এতে লোকমান, তার ভাই নাছির ও বাবা মুক্তিযোদ্ধা আলি মদন গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাদের চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাছিরকে মৃত ঘোষণা করে। বাকি দু’জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।’ যোগ করেন পুজন সেন।

বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল করিম বলেন, ‘স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মাহবুবুল আলমের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রতিপক্ষের হামলায় নাছির নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে আরও দুইজন।’তি

তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় জসিম ও শওকত দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, একটি এলজি, ৫ রাউন্ড গুলি, ২টি কার্তুজ, ছুরি, চাপাতি এবং দা উদ্ধার করা হয়েছে।’

নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির মধ্যে বিরাজমান বাংলাদেশ,। আজকের উল্লেখিত অপরাধ কর্মকাণ্ডের অপরাধীরা সঠিক বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে কি তাদের শাস্তি হবে? না পূর্বের মতো সীমিত পরিসরে শাস্তির মুখোমুখি হবার পর ফের বেপরোয়া হয়ে উঠবে? এমন সকল প্রশ্নই প্রতিনিয়ত বুকে চাপা দিয়ে উত্তর খুঁজতে মুখিয়ে থাকে দেশের সাধারণ মানুষ,।

প্রিয় পাঠকগণ আপনাদের চারিপাশে ঘটে যাওয়া নানা অনিয়ম দূর্নীতি সহ সকল অপরাধ জগতের খবরা-খবর পাঠাতে পারেন আমাদের এই ঠিকায় Email: dlonlinetv@gmail.com আজ এই পর্যন্তই আগামী সপ্তাহে আবারও আমি ডালিয়া লাকুরিয়া হাজির হবো সপ্তাহের অপরাধ চিত্রের সংবাদ নিয়ে,। পরিবার পরিজন নিয়ে সবাই ভালো থাকুন,। সুস্থ থাকুন,। সবসময়ই নিরাপদে থাকুন,। থাকুন ডি.এল নিউজের সঙ্গে,।

আল্লাহ হাফেজ,।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com