ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলের বিকৃত সমালোচনা করছে: রিজভী

0

ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বিরোধী দলের বিকৃত সমালোচনা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ব্যবস্থাপনায় গণমাধ্যমকর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা (পিপিই) প্রদান অনুষ্ঠানে রিজভী এ অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, পরিস্থিতি দিন দিন চরম পরিণতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। আমরা জানি না সরকার এবং সরকারপ্রধান কার পরামর্শে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। মানুষ যা ভাবছে, দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা যা বলছেন এবং যা লিখছেন তার কোনোটাই পাত্তা দেন না প্রধানমন্ত্রী। এমনকি উনার (প্রধানমন্ত্রী) উপদেষ্টা পর্যন্ত বলছেন যে, চিকিৎসকদের চাকরিচ্যুত করা ঠিক হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী সেটা শোনেননি।

রিজভী আরও বলেন, চিকিৎসকদের কী করণীয় বা করা উচিত সে বিষয়ে সিনিয়র চিকিৎসক পরামর্শ দেবেন এটাই স্বাভাবিক। প্রধানমন্ত্রী এটা শোনেন না তাহলে তিনি কার পরামর্শ শুনে এই দেশ পরিচালনা করেন? কীভাবে দেশ পরিচালনা করেন? হবুচন্দ্র রাজার গবুচন্দ্র মন্ত্রিসভার যে রাজত্ব ঠিক একই ধরনের রাজত্ব চলছে। যে সময়ে সংক্রমণ এর মাত্রা বাড়ছে এবং সমাজের নানা স্তরে সংক্রমণ গুচ্ছ গুচ্ছভাবে মারাত্মক বৃদ্ধি হচ্ছে, ঠিক সে সময়ে তিনি শপিংমল থেকে শুরু করে সবকিছু খুলে দিলেন।

তিনি বলেন, আজকে বাসা থেকে গুলশান অফিসে আসতে যে যানজটের মধ্যে পড়েছি এটা অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের সমতুল্য। এই সরকার কার সরকার? জনবান্ধব সরকার হলে এই ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতো না। জবাবদিহিতার সরকার থাকলে, নির্বাচনের সরকার থাকলে এই ধরনের পরিস্থিতি কখনোই হতো না। কখনোই সম্ভব না। এই মহামারি নিয়ে আমি অর্থনীতিবিদ এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের যতগুলো কলাম পড়েছি প্রত্যেকেই বলেছেন যে গণতন্ত্র যে দেশে আছে সে দেশে এর মাত্রা কম হবে। অর্থাৎ মুক্ত আলোচনা যেখানে আছে, কেন না মুক্ত আলোচনার মধ্য দিয়ে সত্য জিনিসটা বেরিয়ে আসে। কিন্তু ফ্যাসিস্টরা, ডিক্টেটররা এটা কখনো পাত্তা দেন না।

রিজভী বলেন, আমি কয়েকদিন আগে দেখেছি মুস্তাক নামে একজন ব্লগার তারপর মিনহাজ উদ্দিন শুধু সত্য কথা লেখার জন্য, ফেসবুকে মন্তব্য করার জন্য এদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অর্থাৎ ক্রান্তিকালে ও ফ্যাসিজমের যে মাত্রা, ফ্যাসিজমের যে কামড় সে কামড় কিন্তু অব্যাহত রয়েছে। ছাত্রদলের সভাপতি মাগুরার তাকে গ্রেফতার করা হলো কোনো কারণ ছাড়া। আর সাংবাদিকরা তো আছেই। এই মহামারি এই যে দুর্যোগকাল এর মধ্যে যে সাংবাদিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন, আমার মনে হয় এটা সরকার সহ্য করতে পারছেন না। সহ্য করতে পারছেন না বলেই তারা টার্গেট করছেন। সরকার সাংবাদিকদের সমালোচনা পছন্দ করতে পারছেন না। পছন্দ করতে পারছেন না বলেই তারা বিকৃত সমালোচনা করছেন।রাষ্ট্র এবং সমাজের বিদ্যমান বিষয়ে সংবাদপত্র সমালোচনা করবে এটাই তো গণতন্ত্র। এটাই তো গণতন্ত্রের মানদণ্ড। এই মানদণ্ডটাকে কখনোই রক্ষা করতে চান না সরকার।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আমরা বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছি, সেটা কেউ সরকার বিকৃত করছেন। যদিও নির্বাচন হলে বিএনপি কোন অবস্থানে থাকতো এটা সবাই জানে, তারপরও আমরা বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছি। নানাভাবে সেটিকে তারা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে। কিন্তু করণীয় যেটা সেটা করছেন না বরং বিপরীত যে দিকটি সে দিকটি তারা করছে। মানুষ চাচ্ছে নিরাপদে থাকতে। সাংবাদিক, ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, নার্স সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে তারা, কিন্তু তাদের চাকরি যাচ্ছে, তারা ওএসডি হচ্ছে, আবার তারা মারা যাচ্ছে করোনা ভইরাস মোকাবিলা করতে গিয়ে। এটা সরকার এবং ক্ষমতাসীনদের কানে যাচ্ছে না।

বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদারের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সহসভাপতি রাশেদুল হক বক্তব্য রাখেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com